হত্যা মামলায় কাউন্সিলরকে আসামি করার দাবি

সম্মেলনে বক্তব্য দেন নিহত মাসুম আহমদের বোন তমা আক্তার। সোমবার দুপুরে জেলা শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে।
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে মাসুম হত্যা মামলার সব আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে তাঁর পরিবার। হত্যাকাণ্ডে জগন্নাথপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম ওরফে মুন্নাকেও আসামি করার দাবি পরিবারের।

আজ সোমবার সুনামগঞ্জ পৌর শহরে নিহত মাসুম আহমদের (২৭) পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। শহরের শিল্পকলা একাডেমির আবদুল হাই মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মাসুমের বোন ও হত্যা মামলার বাদী তমা আক্তার।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌর শহরের ভবানীপুর এলাকায় মাসুম আহমদের বাড়ি। জমি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রতিবেশী সুরুজ মিয়ার বিরোধ ছিল। বিরোধপূর্ণ জমিতে ঝড়ে একটি বাঁশ ভেঙে পড়লে গত ১৬ এপ্রিল সকালে সেটি কাটতে যান মাসুম। এতে বাধা দেন সুরুজ মিয়া। এ সময় তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে সুরুজ মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়াসহ কয়েকজন মাসুম আহমদের ওপর হামলা চালান। আহত মাসুমকে প্রথমে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে সেখানেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল তমা আক্তার ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তমা আক্তার বলেন, তাঁদের বাড়ির উঠান নিয়ে প্রতিবেশী সুরুজ আলী ও তাঁর ছেলেরা জোরপূর্বক একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। অথচ তাঁদের চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা রয়েছে। মাসুম খুন হওয়ার পর কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম তাঁকে মামলায় আসামি না করার জন্য নানাভাবে হুমকি দেন। প্রভাবশালী হওয়ায় আসামির তালিকায় তাঁর নাম দেননি বলে জানান তমা আক্তার।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম বলেন, ‘তখন রমজান মাস ছিল। দুই পক্ষের বিরোধ মীমাংসার জন্য গ্রামের মুরব্বিদের সঙ্গে আমিও সেখানে গিয়েছিলাম। দুই পক্ষই মুরব্বিদের কথা শুনে রমজানের পর বসে বিষয়টি মীমাংসায় রাজি হয়। কিন্তু আমরা চলে আসার পর আবার ঝগড়া হয় এবং ঘটনাটি ঘটে। এতে আমার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। এখন প্রতিহিংসাবশত কেউ হয়তো পরিবারটিকে ভুল বুঝিয়ে এসব করাচ্ছে।’

পুলিশ এ পর্যন্ত মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে একজন জামিনে আছেন। সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলর সাফরোজকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাঁকেসহ অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জগন্নাথপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল আহমদ, নিহত মাসুমের মামা আলী আহমদ, চাচাতো ভাই আবদুল লতিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জগন্নাথপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন। এর বেশি আমি বলতে পারব না। থানার ওসি ছুটিতে আছেন।’