হাটে গিয়ে লাইসেন্স দিলেন তেঁতুলিয়ার এসি–ল্যান্ড

ভোগান্তি এড়িয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের উদ্যোগ নেয় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে গিয়ে চান্দিনা ভিটি লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন করে লাইসেন্স প্রদানের এই উদ্যোগ।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদুল হক শালবাহান হাটের ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স দিচ্ছেন।ছবি : সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান হাট সংলগ্ন মুনিগছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টেবিল–চেয়ার নিয়ে বসেছেন সহকারী কমিশনার–ভূমি (এসি–ল্যান্ড) মো. মাসুদুল হক। পাশের ব্যানারে লেখা—'আপনার হাটে আপনার লাইসেন্স'। সেখানে এসে একে একে লাইসেন্সের কাজ করে নিচ্ছেন শালবাহান হাটের ব্যবসায়ীরা। দৃশ্যটি গতকাল মঙ্গলবারের।

এই কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য সরকারের রাজস্ব আদায়। তবে রাজস্ব দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির মুখে না পড়েন সে জন্য এই উদ্যোগ। এখানে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স নবায়নের পাশাপাশি শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানকে উপস্থিত রেখে ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয় ট্রেড লাইসেন্সও। আর যারা লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে দোকান তৈরি করে ব্যবসা করছেন, তাদেরও লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে বলা হচ্ছে।

এবার এসি–ল্যান্ড স্যার আমাদের কাছে এসেছেন। আমাদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।
আব্দুল লতিফ, প্রশাসনের উদ্যোগের সুফলভোগী

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিনের নির্দেশনায় ভোগান্তি এড়িয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের উদ্যোগ নেয় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে গিয়ে চান্দিনা ভিটি লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন করে লাইসেন্স প্রদানের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। হাটের প্রতিটি দোকানে প্রতি বর্গমিটার জায়গার জন্য ২৫ টাকা হারে দেওয়া হচ্ছে চান্দিনা ভিটি লাইসেন্স। গতকাল বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নবায়ন করা হয়েছে শতাধিক লাইসেন্স।

শালবাহান হাটের ওষুধ ব্যবসায়ী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, 'আগে আমাদের এসি–ল্যান্ড অফিসে গিয়ে এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হতো। দালালের খপ্পরে পড়তে হতো। এতে মূল টাকার চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ হতো। এবার আমরা সেই সুযোগ হাটে বসেই পাচ্ছি। আমি ৯৩৮ টাকা দিয়ে গত তিন বছরের লাইসেন্স নবায়ন একসঙ্গে করেছি।'

আব্দুল লতিফ নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'এবার এসি–ল্যান্ড স্যার আমাদের কাছে এসেছেন। আমাদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।'

তেঁতুলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদুল হক বলেন, 'সাধারণ মানুষকে ভূমি অফিসে এসে তাঁর সময়, অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ও হয়রানির শিকার যাতে না হতে হয়, সে জন্য উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ।' পর্যায়ক্রমে তেঁতুলিয়া উপজেলার প্রতিটি হাটে গিয়ে এই চান্দিনা ভিটি লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন করে লাইসেন্স দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।