হাতকড়া পরানোর পর ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর করে আটকে রাখলেন এসআই

হাতকড়া পরিয়ে একটি কক্ষে জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মুকুল হোসেনকে আটকে রাখা হয়। রোববার বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বগুড়া কলেজ কেন্দ্রে
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা। এতে ক্ষিপ্ত ছাত্রলীগের ওই নেতাকে হাতকড়া পরিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সামনেই পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বেধড়ক মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বগুড়া কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মুকুল হোসেন। তিনি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা একটার দিকে ওই ভোটকেন্দ্রে মেয়র পদে নৌকার এজেন্ট হিসেবে থাকা আওয়ামী লীগ কর্মীদের জন্য প্যাকেট খাবার সরবরাহ করছিলেন ২০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন। একপর্যায়ে প্যাকেট ঘাটতি পড়ায় তিনি কেন্দ্রের বাইরে থেকে আরও কিছু খাবার নিয়ে দ্বিতীয় দফা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন। এ সময় ভোটকেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ধুনট থানার এসআই রফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগের ওই নেতাকে বাধা দেন। এ নিয়ে নৌকার কর্মী ছাত্রলীগ নেতা মুকুল হোসেন পুলিশের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান।

মুকুল হোসেন অভিযোগ করেন, নৌকার এজেন্টদের জন্য খাবার নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে পুলিশের এসআই  রফিকুল ইসলাম অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি মুঠোফোন কেড়ে নেন। কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে হাতকড়া পরিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে নেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সামনেই তিনিসহ আরও একজন কনস্টেবল তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ওই যুবককে কেন আটক করা হয়েছে এবং হাতকড়া পরিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে, তা তিনি জানেন না। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশ কোনো অনুমতি নেয়নি। শুধু জানিয়েছে, কেন্দ্রে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করায় তাঁকে আটক করা হয়েছে। হাতকড়া পরানো অবস্থায় মুকুল হোসেনকে পুলিশের মারধরের বিষয়ে আবদুল মালিক বলেন, ধস্তাধস্তি হয়েছে, মারধরের সময় তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

মামলা কিংবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে হাতকড়া পরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরে ওসি জামান স্যার আছে, তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন।’

কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ দলের সঙ্গে থাকা শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের ওই নেতাকে আটক বা হাতকড়া পরানোর ব্যাপারে এসআই কিছুই জানাননি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ মুকুল হোসেনকে ছেড়ে দেয়। এ বিষয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানার পর ছাত্রলীগের ওই নেতাকে তিনি ছেড়ে দিতে বলেছেন।