হাতিয়ায় ইউপি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট বর্জন
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে দুজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। তাঁরা হলেন হরণী ইউপিতে মুশফিকুর রহমান ওরফে মোরশেদ (ঘোড়া) ও চানন্দী ইউপিতে আমিরুল ইসলাম ওরফে শামীম (ঢোল)।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাতিয়া বাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন মুশফিকুর রহমান। এ ছাড়া বেলা সোয়া দুইটায় স্থানীয় চরনঙ্গলিয়ার মঞ্জু চেয়ারম্যানের বাজারে সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন আমিরুল ইসলাম।
হরণী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুশফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘তামাশার ভোট, তামাশার নির্বাচন বর্জন করলাম। নির্বাচন কমিশনার আলমগীর হোসেন আমাদের যেভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, প্রতিশ্রুতির কিছুই নেই এখানে। প্রশাসনের সহযোগিতায় সব কটি গোপন কক্ষে নৌকার লোকজন নৌকা মার্কায় জোর করে সুইচ টিপে ভোট নিচ্ছে। ভোটারদের চেয়ারম্যান পদে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।’
মুশফিকুর রহমানের অভিযোগ, সকালে কেন্দ্রে আসার পথে নদীর তীরে কয়েকজন এজেন্টকে আটক করে বেঁধে রাখা হয়। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়। কোনো কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে দেওয়া হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, কোনো কেন্দ্রে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নারী ও পুরুষের লম্বা লাইন থাকলেও ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না।
অপর দিকে চানন্দী ইউনিয়নের মঞ্জু চেয়ারম্যানের বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আমিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর প্রতিটি কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর এজেন্টরা প্রভাব বিস্তার করে গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ইভিএম মেশিনে নৌকা প্রতীকের সুইচ টিপে দেওয়া শুরু করেন। নৌকার লোকজন তাঁর এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। এ সময় কেন্দ্রে থাকা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নীরব ভূমিকা পালন করেন। তাই তিনি এই প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্ট বের করে দেওয়া ও গোপন বুথে ঢুকে নৌকা প্রতীকে সুইচ টিপে দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন হরণী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আক্তার হোসেন ও চানন্দী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজাহার উদ্দিন। দুই প্রার্থী দাবি করেন, ভোট গ্রহণকালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।
দুই প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই প্রার্থীর অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালে কোনো প্রার্থী প্রশাসনের কাছে কিংবা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর কাছে কোনো অনিয়মের অভিযোগ করেননি। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।
দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর হাতিয়ার হরণী ও চানন্দী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ২ প্রার্থীসহ মোট ২০ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।