হামলা-সড়ক অবরোধ-অগ্নিসংযোগে কার্যত অচল কোম্পানীগঞ্জ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানের ‍ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর অনুসারীদের সড়ক অবরোধ। শনিবার দুপুর ১২টায় বসুরহাট-চাপারাশিরহাট সড়কের টেকেরবাজারে
প্রথম আলো

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত আবদুল কাদের মির্জা ও তাঁর অনুসারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কে উপজেলা বসুরহাটের অনেক দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও সেতুমন্ত্রীর ভাগনে মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু দুপুর ১২টার দিকে নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনের ডাক দেন।

হামলায় আহত আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী। আর আবদুল কাদের মির্জা ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র। তবে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত পুলিশ হামলার ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি।

এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার টেকেরবাজারে বসুরহাট-চাপরাশিরহাট সড়ক থেকে মিজানুরের অনুসারীদের অবরোধ সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কমপক্ষে ৩০টি গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ইটের আঘাতে পুলিশের চারজন এবং শটগানের গুলিতে মিজানুর রহমানের চারজন অনুসারী বিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বসুরহাটের ইসলামী ব্যাংকের সামনে মিজানুরের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে সকাল ১০টা থেকে তাঁর অনুসারীরা উপজেলা সদরে প্রবেশের বসুরহাট-দাগনভূঞা, বসুরহাট-চাপরাশিরহাট ও বসুরহাট-কবিরহাটসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধ করেন।

সকাল থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ দফায় দফায় অবরোধ সরিয়ে দেয়। এরপর আবার মিজানুরের অনুসারীরা সড়কের ওপর গাছের গুঁড়িসহ বিভিন্ন ভারী বস্তু ফেলে এবং টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসার নেতৃত্বে একদল পুলিশ চাপরাশিরহাট-বসুরহাট সড়কের টেকেরবাজারে অবরোধ সরাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন মিজানুরের অনুসারীরা। এ সময় পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দিলে দুপক্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ শটগান থেকে কমপক্ষে ৩০টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মিজানুর রহমানের আহত চার অনুসারী হলেন ফখরুল ইসলাম ওরফে সবুজ (৫৫), তাঁর ছেলে মো. চয়ন (২০), ভাগনে মো. আরিয়ান হোসেন (২৩) ও রূপনগরের বাসিন্দা মো. হৃদয় হোসেন (২৮)। ইটের আঘাতে পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ও তিনজন পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানের ‍ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর অনুসারীদের সড়ক অবরোধ।
প্রথম আলো

কোম্পানীগঞ্জে অবস্থানকারী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এখনো বিভিন্ন সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করছে। পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে নিয়ে স্থান ত্যাগ করলে আবার ব্যারিকেড দেওয়া হচ্ছে।

সকাল ৯টার দিকে বসুরহাট বাজারে মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলা থেকে রেহাই পাননি মিজানুরের সঙ্গে থাকা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হাসিবুল হোসেনও। ওবায়দুল কাদেরের ভাগনে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু অভিযোগ করেছেন, কাদের মির্জার উপস্থিতিতে তাঁর অনুসারীরা মিজানুর রহমানের ওপর হামলা চালিয়েছেন।

আরও পড়ুন