৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায়
প্রথম আলো

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের জন্য আন্দোলন সাময়িক স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র আবদুল্লাহ আল রাজু এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি সম্মান রেখে আমরা ৭২ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন স্থগিত করছি। আমাদের বিশ্বাস, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনবে প্রশাসন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনতে না পারে, তাহলে আমাদের আন্দোলন চলবে।’

আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র বলেন, তাঁদের বিশ্বাস, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনবে প্রশাসন। যদি না পারে, তাহলে আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুরে
প্রথম আলো

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় একই দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মুখপাত্র আবদুল্লাহ রাজু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা রহমান, দ্বিতীয় বর্ষের আফসানা আশরাফি, ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুদ শেখ।

আবদুল্লাহ রাজু বলেন, ‘তিন দফা দাবির প্রথম দফা ছিল ধর্ষণকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার, সে দাবি পূরণের পথে। আমাদের দ্বিতীয় দাবি ছিল ধর্ষণের প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচিতে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা ও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা, তৃতীয় দাবি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অপর দুটি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

পরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও বিচারের দাবিতে বেলা পৌনে একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাশে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের এ কর্মসূচি চালান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে মঞ্চনাটক অনুষ্ঠিত হয়।

ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে র‍্যাব ছয়জনকে ও পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ছয়জন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।