হালদায় আবারও মিলল মৃত ডলফিন, আড়াই বছরে মরল ২৬টি

ক্যাপশন: হালদায় মরে ভেসে উঠেছে ডলফিনটি। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের রাউজানের অপর তীর নগরীর চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ডের ওয়াসা এলাকায়। ছবি: সংগৃহীত
ক্যাপশন: হালদায় মরে ভেসে উঠেছে ডলফিনটি। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের রাউজানের অপর তীর নগরীর চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ডের ওয়াসা এলাকায়। ছবি: সংগৃহীত

দেশের একমাত্র মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীর চট্টগ্রামের রাউজানের অপর তীরে নগরীর চান্দগাঁও মোহরা অংশে একটি মরা ডলফিন ভেসে উঠেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নদীতে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানোর সময় স্থানীয় কয়েকজন তরুণ ডলফিনটি দেখতে পান।

ঘুরতে যাওয়া তরুণেরা জানান, মোহরা ওয়াসা নামক এলাকায় নদীর তীরে মৃত ডলফিনটি দেখে তাঁরা ছবি তুলে রাখেন। তবে কেউ এটি উদ্ধার করেনি বলে জানান তাঁরা। আবদুল্লাহ আল মামুন নামের এক তরুণ বলেন, এটি কয়েক দিন আগে মারা যেতে পারে। ডলফিনটির মাথার অংশের শুঁড়টি কাটা দেখা যায়। এটির দৈর্ঘ্য ৫ থেকে ৬ ফুট হতে পারে।

হালদা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত (অতি বিপন্ন প্রজাতি) একটি জলজ প্রাণী এই ডলফিন। বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে অতি বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে শুধু হালদাতেই ছিল ১৭০টি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত আড়াই বছরে ২৬টি ডলফিন মরে ভেসে ওঠে এ নদীতে।

নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, হালদায় প্রায় সময় অতি বিপন্ন জলজ প্রাণী ডলফিন মারা যাচ্ছে। বেশির ভাগ ডলফিন আঘাতের কারণে মারা যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। শুক্রবার যে ডলফিন মারা গেছে, সেটির শরীরেও আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, ওই এলাকায় রাতে ১০ থেকে ১২টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। ড্রেজারের পাখার আঘাতে মারা যেতে পারে ডলফিনটি।

নৌ–পুলিশের চট্টগ্রাম সদরঘাট সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দুই সপ্তাহ আগে ওই স্থান থেকে ড্রেজার জব্দ করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছিল। নদীতে নিয়মিত অভিযান চালায় নৌ–পুলিশ।

রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির প্রথম আলোকে বলেন, নদী ও জলজ প্রাণী রক্ষায় হালদায় সব বালুমহালের ইজারা বাতিল করেছে সরকার। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ যাতে বালু তোলা বা যান্ত্রিক নৌকা ঢোকাতে না পারে, সে জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হয়।