হাসপাতাল থেকে কারাগারে প্রধান আসামি শাহ আলম

স্পিডবোট দুর্ঘটনা মামলার প্রধান আসামি শাহ আলমকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আজ দুপুরে মাদারীপুর আদালত চত্বরে।
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনা মামলায় প্রধান আসামি স্পিডবোটচালক শাহ আলমকে (৩৮) কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার বেলা আড়াইটায় তাঁকে মাদারীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের বিচারক সাইদুর রহমান তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

স্পিডবোট দুর্ঘটনার পর থেকে চালক শাহ আলম পুলিশি পাহারায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছাড়পত্র দেয়। এরপর পুলিশ শাহ আলমকে গ্রেপ্তার দেখায়। ওই দিন রাতেই নৌ পুলিশ শাহ আলমকে শিবচর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
জানতে চাইলে আজ বেলা তিনটায় মাদারীপুর আদালত পুলিশের পরিদর্শক রমেশ চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, মামলার প্রধান আসামি শাহ আলমকে আজ দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শাহ আলম এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। তাঁর ডান হাত ভাঙা। সেখানে ব্যান্ডেজ করা আছে। শাহ আলমকে কারাগারে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে।

৩ মে শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে আসার পথে কাঁঠালবাড়ি এলাকায় নোঙর করা বাল্কহেডকে সজোরে ধাক্কা দেয় শাহ আলমের স্পিডবোটটি। এতে প্রাণ হারান ২৬ যাত্রী। আহত হন চালক শাহ আলমসহ পাঁচজন।

শাহ আলম নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার ভাতা ঈদগাহপুর এলাকার আবুল কালামের ছেলে। প্রায় ১৮ বছর আগে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় আসেন কাজের সন্ধানে। যোগ দেন স্পিডবোটচালক হিসেবে। ৩ মে শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে আসার পথে কাঁঠালবাড়ি এলাকায় নোঙর করা বাল্কহেডকে সজোরে ধাক্কা দেয় শাহ আলমের স্পিডবোটটি। এতে প্রাণ হারান ২৬ যাত্রী। আহত হন চালক শাহ আলমসহ পাঁচজন। এ ঘটনায় চরজানাজাত নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) লোকমান হোসেন বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলা করে। এতে শিমুলিয়া স্পিডবোট ঘাটের ইজারাদার শাহ আলম খান, স্পিডবোটের দুই মালিক চান্দু মিয়া ও রেজাউল হক এবং চালক শাহ আলমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

আরও পড়ুন

মামলার আসামি চান্দু মোল্লাকে ৯ মে ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর দ্বিতীয় আসামি হিসেবে চালক শাহ আলমকে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ। এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ঘাটের ইজারাদার শাহ আলম খান ও স্পিডবোটের অপর মালিক রেজাউল হক। শাহ আলম খান মুন্সিগঞ্জের মেদেনীমণ্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন খানের ছোট ভাই।

চরজানাজাত নৌ পুলিশের পরিদর্শক আবদুল রাজ্জাক বলেন, মামলায় পলাতক দুই আসামিকে ধরতে র‌্যাব, পুলিশসহ একাধিক দল কাজ করছে। তিনি আশা করছেন, দ্রুতই ওই আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।