হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৭ বছর পর চালু হচ্ছে সেবা কার্যক্রম

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল। প্রতিষ্ঠার সাত বছর পর শনিবার থেকে সেখানে সেবা কার্যক্রম চালু হবে
ছবি: প্রথম আলো


প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০ শয্যার একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। হাসপাতালের জন্য পাঁচটি ভবন নির্মাণের পর প্রয়োজনীয় আসবাব সরবরাহ করা হয়। ঘটা করে হয়েছিল উদ্বোধনও। কিন্তু সেবা কার্যক্রম আর চালু হয়নি। এরপর কেটে গেছে সাত বছর। অবশেষে সেই হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নে জগদল ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি অবস্থিত। চলতি মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এটি চালু হলে দুটি উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। চিকিৎসার জন্য উপজেলা কিংবা জেলা সদরের যাতায়াতের ভোগান্তি অনেকখানি কমে যাবে তাঁদের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিরাই উপজেলা থেকে জগদল ইউনিয়নে যাতায়াতের জন্য বর্ষায় নৌকা ও শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হাঁটাই ভরসা। এখন অবশ্য শুকনা মৌসুমে ভাড়ায় চালিত কিছু মোটরসাইকেল চলাচল করে। এই ইউনিয়নের ৩৭টি গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ করে দিতেই ২০০৬ সালে জগদল গ্রামের বাজারের পাশে ২০ শয্যার একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতালের জন্য জমি অধিগ্রহণ, পাঁচটি পাকা ভবন, পাম্প হাউস, গ্যারেজ, সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর এটির উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জ-২ আসনের (দিরাই-শাল্লা) সাংসদ তৎকালীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন উপদেষ্টা চিকিৎসক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। কিন্তু এটি আর চালু হয়নি।

জগদল গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক মো. আবদুস সোবহান বলেন, এই এলাকায় পুরোটাই হাওর। এখানকার যাতায়াতব্যবস্থা অত্যন্ত করুণ। এখানে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে তাঁরা আশার মুখ দেখেছিলেন। কিন্তু সেটি দীর্ঘদিন ধরে চালু না হওয়ায় মানুষের মধ্যে হতাশা ছিল। এখন এটি চালু হচ্ছে জেনে মানুষ খুশি।

একই গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. সহিবুর রহমান বলেন, এই হাসপাতাল চালু হলে জগদল ইউনিয়নের ৩৭টি গ্রামের মানুষের পাশাপাশি দিরাই উপজেলার করিমপুর ও জগন্নাথপুর উপজেলার হলদিপুর ইউনিয়নের আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষ সেবা পাবেন। চিকিৎসার জন্য দিরাই, সুনামগঞ্জ কিংবা সিলেটে যেতে সময় ও অর্থ ব্যয়ের সঙ্গে ভোগান্তি কমবে। আবার অনেকের তো গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই।

হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রম চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে বলে জানান সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, এখানে চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও আসবাব সরবরাহ করা হয়েছে। এখানে সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে জেনে এলাকার মানুষও বেশ খুশি।