আদালতে হেফাজত নেতা মুফতি বশির উল্লাহর স্বীকারোক্তি

আদালত
প্রতীকী ছবি

হেফাজতে ইসলামের ডাকা গত ২৮ মার্চ সকাল–সন্ধ্যা হরতালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সাইনবোর্ড এলাকায় যানবাহন ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার মামলায় হেফাজত নেতা মুফতি বশির উল্লাহ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি। মুফতি বশির উল্লাহ নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, আদালতে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর মুফতি বশিরউল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আরিফুর রহমান জানান, গত ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শিমরাইল এলাকায় জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জন বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও হেফাজতের কর্মীদের আসামি করে মামলা করে পুলিশ। ওই ঘটনায় মোট ৯টি মামলা করা হয়। পরে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলাকে। পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা অধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মামলাটি তদন্ত করেন। গতকাল বুধবার পিবিআই কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুফতি বশির উল্লাহকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়। রিমান্ড শেষে তিনি আদালতে ওই দিন তাণ্ডবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন।

মুফতি বশির উল্লাহ নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আদালতে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আরিফুর রহমান আরও বলেন, মুফতি বশির উল্লাহ হরতালে তাণ্ডবে জড়িত অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় নেতাদের নাম প্রকাশ করে আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন। তিনি আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছেন। সেগুলো যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে।

গত ২৮ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ-হেফাজতের সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন দুজন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ১৮টি গাড়ি। ভাঙচুর করা হয় দুটি গণমাধ্যমের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ শতাধিক যানবাহন। ওই দিন সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা অচল হয়ে পড়ে এবং রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।