১০ মাস ধরে ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ হাট ডিগ্রি কলেজের চারতলা ভবনের মূল কাঠামো তৈরি হলেও পলেস্তারা দেওয়া হয়নি। সাম্প্রতিক ছবি
প্রথম আলো

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ হাট ডিগ্রি কলেজের চারতলা ভবনের নির্মাণকাজ গত ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে। কাজ শেষ করতে ঠিকাদারকে একাধিক তাগাদাপত্র দিয়েছে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। এরপরও নির্মাণকাজ শুরু করা হচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্মাণকাজের ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ঠিকাদার ইতিমধ্যে বিল তুলে নিয়েছেন ৯০ শতাংশের বেশি।

নীলফামারী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ওই ভবনের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ঠিকাদারকে সময় দেওয়া হয়েছিল দেড় বছর। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাহার এন্টারপ্রাইজ। তবে কাজটি করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি স্থানীয় ঠিকাদার মোক্তার হোসেন।  
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মীরগঞ্জ হাট ডিগ্রি কলেজের চারতলা ভবনের মূল কাঠামো তৈরি হয়েছে। পলেস্তারা দেওয়া হয়নি। দরজা, জানালা, ওয়্যারিং, বাথরুম ফিটিংস ও সোলার সিস্টেম স্থাপনের কাজ বাকি রয়েছে।

কলেজের অধ্যক্ষ আবুজার রহমান বলেন, কাজ শুরুর প্রায় তিন বছরেও ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, নির্মাণকাজের অনেক কিছু বাকি থাকলেও ঠিকাদার ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেছেন। কাজের চেয়ে বেশি বিল উত্তোলন করায় ঠিকাদার এখন কাজ শেষ করার দিকে নজর দিচ্ছেন না।
কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. মালেকুজ্জামান বলেন, কাজ শেষ না করে ঠিকাদার সবকিছু গুটিয়ে নিয়েছেন। এখন ফোনও ধরতে চান না। ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন চান তিনি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার মোক্তার হোসেন বলেন, ‘মীরগঞ্জ হাট ডিগ্রি কলেজের ভবন নির্মাণকাজটি আমার কেনা। এ কারণে লোকসান গুনতে হবে। এরপরও কাজটি শেষ করতে হবে। দর বাড়ানোর প্রক্রিয়ার কারণে এত দিন কাজ বন্ধ ছিল। আমার আরও কিছু কাজ চলমান রয়েছে। তাই কুলাতে পারছি না। যে টাকা অবশিষ্ট আছে, তা দিয়ে বাকি কাজ শেষ করা যাবে।’

এ ব্যাপারে নীলফামারী শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবু তাহের বলেন, বিভিন্ন ঠিকাদারের প্রতিনিধি হিসেবে একাধিক কাজ বাস্তবায়ন করছেন মোক্তার হোসেন। কোনো কারণে মীরগঞ্জ হাট ডিগ্রি কলেজের কাজটি আটকে গেছে। কাজটি করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বেশি বিল দেওয়ার ব্যাপারে মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি এই কর্মস্থলে আসার আগে এসব বিল দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত হয়ে থাকলে ওই ঠিকাদারের অন্য আরও কাজ আছে। সেগুলো দিয়ে সমন্বয় করা হবে।’