১৯ বছর পর সাবেক সাংসদ হাবিবসহ ৫০ জনের কারাদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

দীর্ঘ ১৯ বছর পর সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর এই রায় ঘোষণা করেন।

এর মধ্যে সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আরিফুর রহমান ও রিপনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, কলারোয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বাচ্চুকে নয় বছরের এবং বাকি ৪৬ জনকে ২ থেকে ৭ বছর মেয়াদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ রায় ঘোষণার সময় ৩৪ জন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। তাঁরা হলেন সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, মো. আবদুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, মো. আবদুর রকিব মোল্ল্যা, মো. আক্তারুল ইসলাম, মো. আবদুল মজিদ, মো. হাসান আলী, ময়না, মো. আবদুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, মো. জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, মো. আবদুস সাত্তার, আবদুস সামাদ, মো. আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, মো. সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, শহীদুল, মো. মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আবদুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, মো. আবদুস সামাদ, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন।

পলাতক আছেন ১৬ জন। তাঁরা হলেন আবদুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আবদুল খালেক, আবদুর রব, সঞ্জু, নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক ও মো. মাহাফুজুর রহমান।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় বলেন, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দেখতে যান। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা যাত্রীবাহী বাস রাস্তার ওপর আড় করে রেখে গাড়িবহরে হামলা চালান। হামলায় জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে এক ডজন দলীয় নেতা-কর্মী আহত হন।

এ ঘটনায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আবদুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭০ থেকে ৭৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। বিভিন্ন আদালত ঘুরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০১৭ সালে আসামি পক্ষ মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টে স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। এর তিন বছর পর আসামি পক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে মামলা ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে আজ এই রায় হয়।