১৯ বছর বয়সেই ছয়বার গিনেস রেকর্ডে নাম তুললেন মাহমুদুল

গিনেস রেকর্ডে নাম লেখানো যেন মাহমুদুলের নেশায় পরিণত হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

গত ডিসেম্বরে ১৯ বছর বয়স পূর্ণ হয়েছে মাহমুদুল হাসান ফয়সালের। এরই মধ্যে ছয়বার গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন তিনি। সর্বশেষ ‘দ্য মোস্ট ফুটবল আর্ম রোলস ইন থার্টি সেকেন্ডস’ ইভেন্টে নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে বিশ্ব দরবারে নিজের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম তুলে ধরেছেন মাগুরার এই তরুণ।

গিনেস কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট বলছে, ‘দ্য মোস্ট ফুটবল আর্ম রোলস ইন থার্টি সেকেন্ডস’ ইভেন্টের রেকর্ডটি এখন মাহমুদুল হাসানের দখলে। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মাগুরার বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে ৩০ সেকেন্ডে ৬৮ বার ঘাড়ের ওপর বল ঘুরিয়ে তিনি এই রেকর্ড করেছেন।

মাহমুদুল হাসান জানান, এই রেকর্ডের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি তিনি পেয়েছেন ১০ এপ্রিল। ‘দ্য মোস্ট ফুটবল আর্ম রোলস ইন থার্টি সেকেন্ডস’ ইভেন্টে আগের রেকর্ডটিও তাঁরই দখলে ছিল। সেবার আধা মিনিটে ৬২ বার ঘাড়ের ওপর বল ঘুরিয়েছিলেন তিনি। কদিন বাদে একই সময়ে তিনি বল ঘুরিয়েছেন ৬৮ বার। এভাবেই গড়তে চান আরও অনেক রেকর্ড। গিনেস বইয়ে নাম লেখানো যেন মাহমুদুলের নেশায় পরিণত হয়েছে।

এর আগে আরও চারবার গিনেস বুকে নাম উঠেছে মাগুরার এই তরুণের। গত বছর এপ্রিলে ‘মোস্ট ফুটবল (সকার বল) নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেস ইন ওয়ান মিনিট’ ইভেন্টে রেকর্ড গড়েন মাহমুদুল হাসান। ১ মিনিটে ৬৬ বার ঘাড়ের ওপর ফুটবল নাচিয়ে এই রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের আগস্টে এক মিনিটে সবচেয়ে বেশিবার ঘাড়ের ওপর বাস্কেটবল নাচিয়ে ও ধরে (দ্য মোস্ট বাসস্কেটবল নেক ক্যাচেস ইন ওয়ান মিনিট) রেকর্ড গড়েন মাহামুদুল হাসান। একই বছরের এপ্রিলে এক মিনিটে দুই হাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪৪ বার বাস্কেটবল ঘুরিয়ে (দ্য মোস্ট বাস্কেটবল আর্ম রোলস ইন ওয়ান মিনিট) রেকর্ড গড়েন তিনি।

দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা অনুশীলন করেন মাহমুদুল
ছবি: প্রথম আলো

মাহমুদুল প্রথম রেকর্ডটি গড়েন ২০১৮ সালে। সেটি ছিল (দ্য মোস্ট ফুটবল আর্ম রোলস ইন ওয়ান মিনিট) এক মিনিটে সবচেয়ে বেশিবার বাহুর ওপরে ফুটবল ঘুরিয়ে (১৩৪ বার) রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান এই তরুণ।

এর মধ্যে কেবল ‘দ্য মোস্ট বাসস্কেটবল নেক ক্যাচেস ইন ওয়ান মিনিট’ রেকর্ডটি হাতছাড়া হয়েছে মাহমুদুলের। সব মিলিয়ে এখন তাঁর দখলে আছে চারটি গিনেস রেকর্ড। মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ম্যাকাট্রনিকস বিভাগে ডিপ্লোমা প্রকৌশলে পড়ছেন মাহামুদুল হাসান। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামে। বাবা সোহেল রানা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। মা মঞ্জুয়ারা খানম গৃহিণী।

ষষ্ঠবারের মতো গিনেস বইয়ে নিজের নাম ওঠানোর পর মাহামুদুলের লক্ষ্যটা আসলে কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এখনো স্থির করিনি। ভালো লাগে বলে করে যাচ্ছি। আরও বেশ কিছু রেকর্ডের প্রস্তুতি আমার রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় হয়তো দুই ডজনের বেশি রেকর্ড আমার দখলে চলে আসবে।’

মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ম্যাকাট্রনিকস বিভাগে ডিপ্লোমা প্রকৌশলে পড়ছেন মাহামুদুল হাসান। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামে।

তবে কাজটা এত সহজ নয় বলে নিজেই জানালেন মাহমুদুল। তিনি বলেন, ‘দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা অনুশীলন করতে হয়। আমাদের দেশে ফ্রি স্টাইল তেমন জনপ্রিয় নয়। এ কারণে পৃষ্ঠপোষকতা তেমন একটা চোখে পড়ে না। আর পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া বড় কিছু করা সম্ভব নয়।’