২৬ বছরেও কল্পনা চাকমার হদিস মেলেনি, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

কল্পনা চাকমাকে অপহরণের ২৬তম বার্ষিকীতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। রোববার সকালে শহরের স্বনির্ভর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

২৬ বছর আগে নিজ বাড়ি থেকে অপহৃত হয়েছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী নেত্রী কল্পনা চাকমা। এরপর এতগুলো বছর কেটে গেলেও এ অপহরণের তদন্ত ও বিচার হয়নি। প্রতিবছর এই দিনে খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এবারও কল্পনা চাকমাকে অপহরণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন।

রোববার সকালে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলকারীরা নারাণখাইয়া রেড স্কোয়ার ঘুরে আবার স্বনির্ভর এলাকায় এসে সমাবেশ করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নীতি চাকমার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য রেশমি মারমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান।

১৯৯৬ সালের ১১ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগের রাতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার লাল্যাঘোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অপহৃত হন কল্পনা চাকমা। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, কল্পনা চাকমাকে অপহরণের ২৬ বছর পূর্ণ হলো আজ। অথচ সরকার এখনো তাঁর কোনো হদিস দিতে পারেনি। বরং কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের শাস্তি না দিয়ে এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা প্রপাগান্ডা ও মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এ ঘটনায় বাঘাইছড়ি থানায় মামলা হয়েছিল। ওই মামলার তদন্তে ৩৯ কর্মকর্তা বদলি হলেও কল্পনা চাকমার কোনো হদিস মেলেনি।

বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, প্রশাসন ও রাষ্ট্রের অনীহা ও ঘটনার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণে দীর্ঘ ২৬ বছরেও কল্পনা চাকমাকে অপহরণের বিচার হচ্ছে না। একইভাবে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর সোহাগী জাহান তনু হত্যার বিচারও হয়নি। এ দেশে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি, নিপীড়ক, খুনিরা ক্ষমতাবানদের ছত্রছায়ায় থাকায় রেহাই পেয়ে যান।

সমাবেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নারী ধর্ষণ, নির্যাতন, গুম-খুন, অপহরণ, বিনা বিচারে হত্যা বন্ধের দাবি জানান বক্তারা।