প্রায় তিন লাখ টাকায় বিক্রি হলো পোপা মাছটি

প্রায় ৩৭ কেজি ওজনের এই পোপা মাছের দাম উঠেছে প্রায় তিন লাখ টাকা। আজ সোমবার বিকেলে টেকনাফের কায়ুকখালীয়াপাড়া ফিশারি ঘাট থেকে তোলাপ্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফে স্থানীয় জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ৩৬ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের একটি রুপালি পোপা মাছ। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়াসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মাছটি জালে ওঠে। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় মাছটি ‘কালা পোপা’ নামে পরিচিত। মাছটি লম্বায় প্রায় সাড়ে তিন ফুট। মাছটি ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় এক মাছ ব্যবসায়ী কিনে নিয়েছেন।

টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে ৩৭ কেজি ওজনের বড় পোপা মাছটি ধরা পড়ার খবর তিনি শুনেছেন। সাধারণত এত বড় পোপা মাছ ধরা পড়ে না। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম মিকটেরোপারকা বোনাসি (Mycteroperca bonaci)। পোপা মাছের বায়ুথলি বা এয়ার ব্লাডারের কারণে মাছটির মূল্য বেশি। এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি হয়, এ জন্য মাছটির এত দাম বলে তিনি জানান।

সাধারণত এত বড় পোপা মাছ ধরা পড়ে না। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম মিকটেরোপারকা বোনাসি (Mycteroperca bonaci)। পোপা মাছের বায়ুথলি বা এয়ার ব্লাডারের কারণে মাছটির মূল্য বেশি।

গত শনিবার সকালে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়ার মোহাম্মদ শাহ আলমের মালিকানাধীন ট্রলারে করে ১০ জন মাঝিমাল্লা বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান। কালা পোপা মাছটি জালে আটকা পড়লে জেলেরা ট্রলারের মালিক শাহ আলমকে বিষয়টি জানান। তিনি তাঁদের টেকনাফে চলে আসার জন্য বলেন।

আরও পড়ুন
২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন সাবরাং এলাকার মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম। বর্তমানে মাছটি তাঁর ফিশারিজে আছে। আজ সোমবার বিকেলে টেকনাফের কায়ুকখালীয়াপাড়া ফিশারি ঘাট থেকে তোলা
প্রথম আলো

ওই ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ শফিক বলেন, জালে বড় মাছ দেখে সবাই আনন্দিত হন। টেকনাফের কায়ুকখালীয়া মাছঘাটে আসার সঙ্গে সঙ্গে বড় মাছ ধরা পড়ার খবরে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। পরে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন সাবরাং এলাকার মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম। বর্তমানে মাছটি তাঁর ফিশারিজে আছে।

পোপা মাছের ফুসফুসের দাম অনেক বেশি হওয়ায় চট্টগ্রামে নেওয়া যায় কি না, সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পটকা বা ফুসফুসটির ওজন ৯০০ গ্রামের বেশি হলে বিক্রি করে ভালো লাভ হবে। আর ওজন কম হলে লোকসান গুনতে হবে।
নুরুল ইসলাম, মাছ ব্যবসায়ী ও আড়তদার

মাছ ব্যবসায়ী ও আড়তদার নুরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পোপা মাছের ফুসফুসের দাম অনেক বেশি হওয়ায় চট্টগ্রামে নেওয়া যায় কি না, সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি ঝুঁকি নিয়ে মাছটি কিনেছেন জানিয়ে বলেন, মাছটি কেটে বিক্রি করলে প্রতি কেজির দাম ৭০০ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না। সেই হিসাবে ২৫ হাজার ৫০০ টাকা পাওয়া যাবে। তবে এর মধ্যে ফুসফুসটির দাম অনেক চড়া। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পি কে দাসের কাছে মাছটি বিক্রি করার কথা হয়েছে। পি কে দাস বিদেশে মাছ ও মাছের পটকা রপ্তানি করে থাকেন। পটকা বা ফুসফুসটির ওজন ৯০০ গ্রামের বেশি হলে বিক্রি করে ভালো লাভ হবে। আর ওজন কম হলে লোকসান গুনতে হবে।

সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফজলুল হক বলেন, একটি মাছ এত দামে বেচাকেনার খবর আর কখনো শোনেননি। গত ডিসেম্বর মাসে ২৮ কেজি ওজনের একটি পোপা মাছ বিক্রি হয়েছিল ১ লাখ ৯১ হাজার টাকায়।