৫ জুন বিয়ে করেছেন রেলমন্ত্রী, পাত্রী আইনজীবী

সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী শাম্মী আক্তারের সঙ্গে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

বেশ কিছুদিন আগে আইন বিষয়ে পরামর্শ নিতে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের কাছে গিয়েছিলেন আইনজীবী শাম্মী আক্তার। সেখান থেকেই দুজনের পরিচয়। পরবর্তী সময়ে আলোচনার মাধ্যমে পারিবারিকভাবে বিয়ে। করোনার কারণে কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়, সবকিছু ঘরোয়াভাবেই হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুরের বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী এবং কনে শাম্মী আক্তারের বড় ভাই মো. জাহিদুল ইসলাম। শাম্মী দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার নতুন বাজার এলাকার প্রয়াত আবদুর রহিমের মেয়ে। ৫ জুন (শনিবার) ঢাকার উত্তরায় মন্ত্রী নূরুল ইসলামের সঙ্গে শাম্মী আক্তারের আকদ হয়। শাম্মী আক্তার পেশায় একজন আইনজীবী। পাশাপাশি ঢাকার একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে এটি। কনে শাম্মী আক্তারের বয়স ৪২ বছর আর বর নূরুল ইসলামের বয়স ৬৫।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সবকিছু চূড়ান্ত হলে তিনিই আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানাবেন। তবে ইতিমধ্যে বিয়ের ব্যাপারটি কিছু দূর এগিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

শাম্মী আক্তারের বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, তাঁরা দুই ভাই, এক বোন। শাম্মী সবার ছোট। এর আগে কুষ্টিয়ায় বোনের বিয়ে হয়েছিল। সেখানকার একটি কন্যাসন্তানও আছে তাঁর। শাম্মী আক্তার বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় থাকেন। আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। হাইকোর্টে এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর জুনিয়র হিসেবে আইন প্র্যাকটিস করছেন। পাশাপাশি ঢাকার একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।

বিয়ের বিষয়ে জাহিদুল বলেন, বেশ কিছুদিন আগে আইন বিষয়ে পরামর্শ নিতে রেলমন্ত্রীর কাছে যান। সেখান থেকেই পরিচয়। পরবর্তী সময়ে আলোচনার মাধ্যমে পারিবারিকভাবে ৫ জুন বিয়ে সম্পন্ন হয়। করোনার কারণে কোনো আনুষ্ঠানিকতা হয়নি, সম্পূর্ণ ঘরোয়াভাবে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বিয়েতে তাঁরা দুই ভাই উপস্থিত ছিলেন।

বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী জানালেন, বিয়ের আলোচনা ঢাকা থেকে শুরু হলেও বিয়ের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে রেলমন্ত্রী ছিলেন মুজিবুল হক। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বিয়ে করেন। সেটি মুজিবুল হকের প্রথম বিয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) চাকরি করতেন শাম্মী আক্তারের বাবা। তাঁদের আদি নিবাস ছিল পাবনা জেলায়। পরবর্তী সময়ে বাবার চাকরির সুবাদে প্রায় ৩৫ বছর আগে বিরামপুরে চলে আসেন তাঁরা। তারপর বিরামপুরের নতুন বাজার এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি করে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান।

নূরুল ইসলাম ১৯৫৬ সালের ৫ জানুয়ারি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আইনপেশায় জড়িত রেলমন্ত্রী ব্যক্তিজীবনে এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। তিনজনেরই বিয়ে দিয়েছেন। গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে তাঁর স্ত্রী নিলুফার জাহান মৃত্যুবরণ করেন। তিনি পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সদস্য এবং পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। তাঁর বড় ভাই প্রয়াত আইনজীবী সিরাজুল ইসলামও জাতীয় সংসদ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নূরুল ইসলামও একজন আইনজীবী।

আরও পড়ুন