৫ প্রার্থীর সবাই আ.লীগ ঘরানার, ক্ষমতা প্রদর্শন

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। নৌকার প্রার্থীর পাঁচ সমর্থক আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের পাঁচ প্রার্থীই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গ ও সমর্থিত সংগঠনের। তাঁদের মধ্যে তিনজনই স্থানীয় সাংসদের পরিবারের সদস্য। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, এসব প্রার্থী ততই একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলছেন।

সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ককটেল হামলার অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম আসিফ শামস। তাঁরা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী এটি সাজানো বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, মামলা দেওয়ার কৌশল হিসেবে নৌকার সমর্থকেরা এমন ঘটনা সাজিয়েছেন।

মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় সাংসদ শামসুল হকের ছেলে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা এস এম আসিফ শামস। একই পরিবারের অন্য প্রার্থীরা হলেন সাংসদের ভাই ও বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল বাতেন ও ভাতিজি এস এম সাদিয়া আলম।

অন্য দুই প্রার্থী হলেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এইচ এম ফজলুল হক এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ও সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কে এম আবদুল্লাহ।

গত মঙ্গলবার বেড়া পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের সব জায়গাতেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আসিফ শামসের পোস্টার টাঙানো। সে তুলনায় আবদুল বাতেনসহ অন্য প্রার্থীদের পোস্টার কম। বেড়া বাজারে কথা হয় ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। বলেন, প্রচার শুরুর পর থেকে এলাকা গরম। প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ছোটখাটো বিষয়েও ঝামেলা হচ্ছে। ভোটের দিন পরিবেশ সুষ্ঠু থাকবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা আছে।

এদিকে ভোটের দিনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থীরাও। তাঁদের নানা অভিযোগ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে। ‘বিদ্রোহী’ বা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল বাতেন বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকেরা পাড়া-মহল্লায় গিয়ে সমর্থকদের ভয় দেখাচ্ছেন। বিভিন্নভাবে হুমকিও দিচ্ছেন। তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কায় আছেন।

আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী এইচ এম ফজলুল হক বলেন, তাঁকে পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকেরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী কে এম আবদুল্লাহ ও সাদিয়া আলমও একই অভিযোগ করেছেন।

তবে কোনো অভিযোগই আমলে নিতে চাননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসিফ শামস। অন্য প্রার্থীদের অভিযোগকে তিনি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন। বলেন, কাউকে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। উল্টো তিনিই হুমকির মধ্যে আছেন। তাঁর চাচার (বাতেন) লোকজন তিনটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন। কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলছেন, পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে তাঁরা চেষ্টা করছেন। আর পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ভোট নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। তাঁরা সবদিকেই নজর রাখছেন।