৬তলা থেকে পড়ে মেডিকেল টেকনোলজিস্টের মৃত্যু

আটতলা এই ভবনের ছয়তলার রেলিংবিহীন বারান্দা থেকে পড়ে যায় সুস্মিতা।
প্রথম আলো

গোপালগঞ্জে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের আটতলাবিশিষ্ট একটি ভবনের ষষ্ঠ তলার বারান্দা থেকে পড়ে সুস্মিতা মজুমদার ইভা (২৫) নামের এক মেডিকেল টেকনোলজিস্টের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভবনটির নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। যেখান থেকে ওই নারীর পড়ে গেছেন, সেটি বারান্দা হলেও তাতে রেলিং দেওয়া ছিল না।

এখন পর্যন্ত এটিকে দুর্ঘটনাই বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। তবে নিহত নারীর পরিবার থেকে ঘটনাটি সন্দেহজনক দাবি করে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।

নিহত সুস্মিতা মজুমদার গোপালগঞ্জ পৌরসভার জনতা রোডের চিকিৎসক জগদীশ মজুমদারের মেয়ে। তিনি গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগে স্বেচ্ছাসেবক টেকনোলজিস্ট হিসেবে বিনা বেতনে কাজ করছিলেন। তাঁর স্বামীর নাম রাজীব মজুমদার। তাঁদের এক ছেলেসন্তান রয়েছে।

মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের যে জায়গা থেকে সুস্মিতা পড়েছে, সেখান থেকে পড়ার কথা নয়। বিষয়টি আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে বলেছি।
অনুপ মজুমদার, গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও সুস্মিতার চাচা

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, শনিবার শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ষষ্ঠ তলায় পিসিআর ল্যাব টেকনোলজিস্টদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলছিল। বায়োটেক সার্ভিসের পিসিআর প্রকৌশলী মহিবুল হাসান সেখানকার বারান্দায় ছয় প্রশিক্ষণার্থীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে সুম্মিতা নিচে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

৬ তলা থেকে পড়ে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সুস্মিতা মজুমদার ইভার মৃত্যু্তে স্বজনের আহাজারি। আজ সকালে গোপালগঞ্জে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে।
প্রথম আলো

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বায়োটেক সার্ভিসের পিসিআর প্রকৌশলী মহিবুল হাসান বলেন, ‘আজ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ষষ্ঠ তলায় পিসিআর ল্যাব টেকনোলজিস্টদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলছিল। এ সময় আমরা কয়েকজন অল্প সময়য়ের জন্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। প্রশিক্ষণার্থী সুস্মিতা মজুমদার বারান্দার পাশেই ছিল। হঠাৎ করে সে পড়ে গেল এবং দুর্ঘটনা ঘটে গেলে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং মর্মান্তিক ব্যাপার।’

তবে সুস্মিতার চাচা গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক অনুপ মজুমদার বলেন, ‘ফরিদপুর থেকে টেকনোলজিস্ট হিসেবে পাস করার পর সুস্মিতা করোনা রোগীদের সেবা দিতেই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে অবৈতনিক টেকনোলজিস্ট হিসেবে যোগদান করেন। মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের যে জায়গা থেকে সুস্মিতা পড়েছে, সেখান থেকে পড়ার কথা নয়। বিষয়টি আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে বলেছি। তবে এখনো লিখিতভাবে কিছু জানাইনি।’

ঘটনা জানার পর জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহিদা সুলতানা, সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ, ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক অসিত মল্লিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনসহ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।