৭০ থেকে ৭৫ ভাগ ভোটার কেন্দ্রে এসে ভোট দেবেন: আ.লীগ প্রার্থী গিয়াস

বরিশালের উজিরপুর পৌরসভার নির্বাচন আগামীকাল সোমবার (২৮ ডিসেম্বর)। মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী। তিনি উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসন্ন নির্বাচন ও পৌরসভার সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন প্রথম আলোর গৌরনদী প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম
মো. গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী

প্রশ্ন :

মেয়রের দায়িত্বে আছেন পাঁচ বছর। প্রায় ১৩ হাজার ভোটারের এই পৌর শহরে আপনি কতটুকু নাগরিক সুবিধা পূরণ করেছেন?

গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: উজিরপুর তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা। রাজস্ব আয় নেই বললেই চলে। এডিবির কিছু বরাদ্দ পাওয়া গেলেও এখানে উন্নয়নের জন্য তেমন বরাদ্দ নেই বললেই চলে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলাম। ওই নির্বাচনে আমার প্রতিশ্রুতি ছিল সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত, আধুনিক পৌরসভা উপহার দেওয়ার। সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত বিষয়ে শতভাগ সফল হওয়ার পর এবার আধুনিক পৌরসভা গঠনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উজিরপুর পৌর এলাকায় রাস্তাঘাট ছিল না। গত ৫ বছরে ২৫টি সড়কের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।

প্রশ্ন :

উজিরপুর পৌরসভায় সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এ ব্যাপারে আপনার পরিকল্পনা কী?

গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: এবার নির্বাচিত হলে সুপেয় পানি ও নালা নির্মাণে অগ্রাধিকার নিয়ে প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রশ্ন :

দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: আগেই বলেছি, মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও সম্প্রীতির উজিরপুর উপহার দেওয়ার কথা দিয়েছিলাম, তা প্রায় শতভাগ বাস্তবায়ন করেছি। পাশাপাশি নাগরিক সেবাসহ ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি, তাতে আমি আশা করি, দ্বিতীয়বারে পৌরবাসী আমাকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করবেন। তা ছাড়া তিনজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে মানুষ আমাকেই আপন করে নিয়েছে। আমিই নির্বাচিত হব।

প্রশ্ন :

২০১৫ সালে নির্বাচনে আপনার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছিলেন। এবার ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এতে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি প্রার্থী। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?

গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: অতীতে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জ্বালাও–পোড়াও করে বিএনপি ও তার প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। জনগণ তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তাঁরা কখনোই পরাজয়কে মেনে নিতে পারেননি। তাই অযথাই অভিযোগ তুলে নিজের ব্যর্থতার দায় এড়াতে চান। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না বলে আমি মনে করি।

প্রশ্ন :

নারী উন্নয়নে আপনার বিশেষ কোনো কর্মসূচি আছে কি না?

গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: নারী উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করাই আমার নারী উন্নয়নের কর্মসূচি।

প্রশ্ন :

ইভিএমে ভোটের বিষয়ে এলাকার অধিকাংশ ভোটারের ধারণা নেই। ভোটারদের সচেতন করতে আপনার কোনো পদক্ষেপ ছিল কি?

গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি আমিও ভোটারদের সচেতন করতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদানে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রজেক্টরে প্রচারণা চালাচ্ছি এবং ভোট দেওয়ার পদ্ধতি প্রদর্শন করছি।

প্রশ্ন :

অতীত অভিজ্ঞতায় ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে অনেকটাই অনাগ্রহী। এবারে ভোটারের কেন্দ্রে আসার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: আমাদের এলাকায় ভোটাররা সব সময়ই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন। কিন্তু বিএনপি–জামাতের একটি মহল ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসেনি বলে অপপ্রচার চালায়। উজিরপুরে পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের মধ্যে একটি জাগরণ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড ও মহল্লায় দিনরাতভর চলছে প্রচার–প্রচারণা। এতে মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, তাতে আমি আশাবাদী, শতকরা ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ ভোটার কেন্দ্রে হাজির হয়ে ভোট দেবেন। তাঁরা উন্নয়নের নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন।

প্রথম আলো: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী: প্রথম আলোকেও ধন্যবাদ।