৮ ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল শুরু

কুয়াশা কমে যাওয়ায় আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সকালে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ঘন কুয়াশায় আট ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। এরপর আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আবার ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।

দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এবং পাটুরিয়া প্রান্তে পাটুরিয়া-ঢাকা মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানবাহনের লম্বা সারি তৈরি হয়েছে। এতে শত শত যানবাহনের কয়েক হাজার যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়লে রাত দেড়টার দিকে উপায় না পেয়ে কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় পাটুরিয়া প্রান্তে পাঁচটি এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে পাঁচটি ফেরি নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। এর আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে আসা পাঁচটি ফেরি মাঝনদীতে আটকা পড়ে। শীত ও কুয়াশায় রাতভর নদীতে আটকে থাকায় সবাই বাড়তি দুর্ভোগের শিকার হন।

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসের তত্ত্বাবধায়ক নাসিম শেখ বলেন, গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁরা পাটুরিয়া ঘাটের কাছাকাছি এসে সিরিয়ালে আটকা পড়েন। কিছুক্ষণ পরই ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর সারা রাত ঘাটের সিরিয়ালেই আটকা ছিলেন। আট ঘণ্টা পর ফেরি চালু হলে ঘাটের বাইরে থাকা গাড়িগুলো ধীরে ধীরে চলতে শুরু করেছে। তবে শীতের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকায় বাসের অনেক যাত্রী ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

এদিকে সিয়াম প্রামাণিকসহ তাঁর কয়েকজন বন্ধু গতকাল রাতে মাগুরা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। মধ্যরাতে তাঁদের গাড়িটি দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট এলাকায় পৌঁছানোর পর তাঁরা ফেরি বন্ধের খবর পান। সিয়াম প্রামাণিক বলেন, ‘আজ সকালেই আমাদের চট্টগ্রাম পৌঁছানোর কথা ছিল। অথচ সারারাত অপেক্ষার পর মাত্র ফেরি পার হচ্ছি।’

ঘন কুশারা কারণে মধ্যরাতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

আজ সকালে দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঘাট–সংলগ্ন সড়কগুলোতে দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটারজুড়ে ঢাকামুখী গাড়ির লম্বা সারি দেখা গেছে। কুয়াশা কিছুটা কমে যাওয়ায় ধীরগতিতে গাড়ির সারিগুলোকে সামনে এগোতে দেখা গেছে।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মৌসুমের দ্বিতীয় দফা কুয়াশায় নৌযান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হলো। তবে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কুয়াশা অনেকটা কেটে যাওয়ায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকার পাশাপাশি ফেরি স্বল্পতার কারণে ঘাটে যানবাহনের বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।