৮০ ভাগ কাজ হয়েছে পিরোজপুরের অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর

পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুতগতিতে চলছে স্প্যানের কাজ । গত বুধবার বেকুটিয়া এলাকায়
ছবি : প্রথম আলো

পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছর জুনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করতে চায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে সেতুর ১২টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। আর ১১টি স্প্যানের মধ্যে বাকি আছে ৪টি স্প্যানের কাজ।

সেতুটি নির্মিত হলে সড়কপথে বরিশালের সঙ্গে খুলনার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পাশাপাশি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পায়রা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে মোংলা সমুদ্রবন্দরের সড়ক যোগাযোগ চালু হবে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ সড়কের কাজ শেষের দিকে। পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। স্প্যানের কাজ করছেন প্রকৌশলী ও শ্রমিকেরা।

বাসচালক মো. জসিম বলেন, বরিশাল-খুলনার এ পথে বিপুলসংখ্যক যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। ফলে ফেরিতে যানজট লেগেই থাকে। ফেরি পারাপারের জন্য অনেক সময় এক থেকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। সেতুটি হলে এ অঞ্চলের মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।

পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদর ও কাউখালী উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে কচা নদী। এ নদীর বেকুটিয়া এলাকায় ফেরি পারাপার হয়ে বরিশাল-খুলনা সড়কে যানবাহন চলাচল করে। সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা তৈরির জন্য চীন সরকারের অনুদানে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন।

সওজ সূত্র জানায়, ৯৯৮ মিটার লম্বা ও ১৩ দশমিক ৪০ মিটার চওড়া এ সেতুতে ১২টি পিলার ও ১১টি স্প্যান থাকবে। সেতুর দুই প্রান্তে ১ হাজার ৪৬৭ মিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। সংযোগ সড়কে পানিনিষ্কাশনের জন্য একটি ১২ মিটার সেতু ও একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি নদীর তলদেশ থেকে ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু। ৮৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চীনের চায়না রেলওয়ে ১৭ ব্যুরো গ্রুপ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান এ সেতুটি নির্মাণ করছে।

সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমির হোসেন মাঝি বলেন, পিরোজপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল কচা নদীর বেকুটিয়া এলাকায় সেতু নির্মাণের। সেতুটি হলে এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে।

সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহামুদ বলেন, অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে এ সেতুর ৮০ শতাংশ কাজ শেষ। আশা করা যাচ্ছে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে কাজটি শতভাগ বাস্তবায়িত হবে। এরপর সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।