'এবার যাতে বিচারটি শেষ হয়'

১৬ বছর আগে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার মামলা আবার সচল হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ গোলাম কবিরের আদালতে বাদীসহ তিনজনের সাক্ষ্য ও জেরা হয়।
সরকারি কৌঁসুলি মো. লোকমান হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মামলার আসামি আমিনুর রহমান চৌধুরী আট বছর আগে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে তাঁকে আসামি করা হয়েছে দাবি করে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ নেন। সম্প্রতি এটি প্রত্যাহার হওয়ার পর নতুন করে আবার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। মামলার বাদী বিমল শীলকে জেরা করেছেন আসামির আইনজীবী। পাশাপাশি দুজনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। দুজন মামলার জব্দ তালিকা ও সুরতহাল প্রতিবেদনের সাক্ষী। এ ছাড়া মো. সেলিম নামের এক আসামির জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তা নাকচ করে দেন।
মামলা সচল হওয়ায় বিচার শেষ হওয়া নিয়ে নতুন করে আশায় আছেন মামলার বাদী বিমল শীল। গতকাল বিকেলে আদালত প্রাঙ্গণে তিনি প্রথম আলোকে বলেন,‘এবার যাতে বিচারটি শেষ হয়। আর পারছি না। আদালতে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’
২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের শীলপাড়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের ১১ জনকে ঘরে আটকে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। সেদিন বাড়ি থেকে পালিয়ে ওই পরিবারের এক সদস্য বিমল শীল বেঁচে যান।
মামলায় ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ১৬ জনের সাক্ষ্য হয়েছে। গতকাল সাক্ষ্য দেওয়া দুজন হলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন আহমেদ ও আবু মুছা। ৩৮ আসামির মধ্যে জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন ১৬ জন। হাজতে আছেন তিন আসামি।
ঘটনার দিন রাতে বাঁশখালীতে পুড়িয়ে মারা হয় বিমল শীলের বাবা তেজেন্দ্র লাল শীলসহ ১১ জনকে। পল্লি চিকিৎসক বিমল শীল সেদিন লাফ দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। এরপর থেকে তিনি চট্টগ্রাম শহরে থাকছেন। খালি পড়ে আছে ভিটেটি।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনার ২৫ মাস পর পুলিশের দেওয়া প্রথম অভিযোগপত্রে বাঁশখালীর বিএনপি নেতা আমিনুর রহমানের নাম বাদ দেওয়া হয়। বাদী নারাজি দিলে আদালত পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন। এর দুই বছর পর পুলিশ আবারও আমিনুরকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এবারও বাদী নারাজি দেন। সর্বশেষ চতুর্থ দফায় ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি আমিনুরসহ ৩৯ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। আমিনুরের দাবি, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁর নাম জড়ানো হয়। এর মধ্যে একজনকে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।