মূল ফটকে তালা দিয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতা–কর্মীরা। আজ সন্ধ্যা সাতটায়
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে এক ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন ‘সিক্সটি নাইন’ নামের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একটি পক্ষের নেতা–কর্মীরা। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত টায়ার জ্বালিয়ে অর্ধশতাধিক নেতা–কর্মী এ বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ করা নেতা–কর্মীদের দাবি, সুমিত মন্ডল নামের তাঁদের একজন কর্মীকে সিএনজিচালিত একজন অটোরিকশাচালক মারধর করেছেন। ওই চালকের বিচার চান তাঁরা।

সুমিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। অটোরিকশাচালকের সঙ্গে তাঁর কী হয়েছিল, জানতে সুমিতের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু এ নিয়ে পরে কথা বলবেন জানিয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে আবার কল করা হলে তাঁর মুঠোফোনের সংযোগ পাওয়া যায়নি।

মারধরের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলমের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে সামান্য ঝামেলা তো লেগেই থাকে। ভাড়ার টাকা নিয়ে অটোরিকশাচালকের সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি শুনেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

কাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। এই ইউনিটে পরীক্ষা দেবেন ৩৯ হাজার ৩৯২ জন। রোববার থেকেই পরীক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেছেন। পরীক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম নগর থেকে বাসে ১ নম্বর ফটক এলাকায় আসেন। ১ নম্বর ফটক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব দুই কিলোমিটার। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ক্যাম্পাসে যান তাঁরা। কিন্তু ছাত্রলীগের বিক্ষোভের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে বিপাকে পড়েন পরীক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এ উপপক্ষ ২২ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি সভায় আমন্ত্রণ না জানানোয় মূল ফটকে তালা ঝুলিয়েছিল। তখনো তাঁরা দাবি করেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক তাঁদের একজন কর্মীকে মারধর করেছেন। তবে কোন চালক কখন, কোথায় মারধর করেছেন, প্রমাণ দিতে পারেননি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ছাত্রলীগের ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। এগুলোর একটি অংশ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর এবং আরেকটি অংশ আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। সিক্সটি নাইন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। ক্যাম্পাসে এই উপপক্ষটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।

বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে তাঁর সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দিয়েছেন। এটা ছাত্রলীগের কোনো বিষয় নয়। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করেছেন।