চবিতে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ছুরিকাঘাত, দুই উপপক্ষের সশস্ত্র মহড়া

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের অপর একটি উপপক্ষের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাঝুপড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷ আহত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম মির্জা সফল প্রধান।

তিনি ছাত্রলীগের সিক্সটি নাইন উপপক্ষের কর্মী। চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) কর্মীরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মির্জা সফল প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ছুরিকাঘাতের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা শাহজালাল হল এবং সিএফসি উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁদের হাতে রামদা ও লাঠিসোঁটা দেখা যায়। দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সিক্সটি নাইন উপপক্ষের অভিযোগ, তিন থেকে চার মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে সিট ধরা নিয়ে মির্জা প্রধান সফলের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয়েছিল সিএফসি উপপক্ষের মেহেদী হাসানের। পরে তাঁরা এ ঘটনার সমাধান করেছিলেন। সোমবার দুপুরে কলাঝুপড়ি এলাকায় সফলকে একা পেয়ে দলবল নিয়ে মেহেদী তাঁর ওপর হামলা করেন। একপর্যায়ে সফলকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

অভিযুক্ত মেহেদী হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে তাঁর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে লাইন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সিএফসি উপপক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক আর সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। জানতে চাইলে রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। মারধরের বিষয়টি শুনেছেন, তবে বিস্তারিত জানেন না।

পরে সিএফসি উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ প্রথম আলোকে বলেন, কথা-কাটাকাটির জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে৷ তিনি বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন। দুই পক্ষের জ্যেষ্ঠরা বসে বিষয়টি সমাধান করে নেবেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মারধরের শিকার ছাত্রের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষে আছেন সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারীরা। আরেকটি পক্ষে আছেন সাবেক সিটি মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা।

ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে রয়েছে ১১টি উপপক্ষ। এর মধ্যে বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। বাকি নয়টি উপপক্ষ নাছিরের অনুসারীদের।