মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং
ছবি: সংগৃহীত

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বাংলাদেশ সফররত অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান হাছান মাহমুদ।

অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী এবং ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদিয়া সিম্পসন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৬ বছরে অস্ট্রেলিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটি প্রথম বাংলাদেশ সফর উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী গো হুইটল্যামকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। রোহিঙ্গাদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করায় পেনি ওংকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ জানান, আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, বাংলাদেশের ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ও ৪০টি আইটি ভিলেজে অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগ। বাংলাদেশিদের মৌসুমি কর্মসংস্থান। অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ। অবৈধ অভিবাসন রোধ এবং জ্বালানি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার টেকনিক্যাল অ্যান্ড ফারদার এডুকেশনের সহায়তার আওতায় বাংলাদেশের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোয় উন্নত প্রশিক্ষণ সহযোগিতা চেয়েছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ইউটিসির সঙ্গে চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা রয়েছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও এই সুবিধা চালু করা যায় কি না, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত চার বছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে চার বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে দাঁড়িয়েছে; যা আমরা আগামী পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হবে বলে আশা করি।’

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেন, সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে ব্যাপক উন্নতি করেছে, তা আরও এগিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায়।

এক প্রশ্নের জবাবে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মেরিটাইম সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য তাঁর দেশের কোস্টগার্ডের প্রধান বাংলাদেশ সফর করবেন। ভারত মহাসাগরীয় দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।