আদালত অবমাননা: বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেনের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

বিচার বিভাগ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে আদালত অবমাননা থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

ইউটিউবে বিচার বিভাগ নিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেনের দেওয়া এক বক্তব্য গত ২৯ এপ্রিল আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পরে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার রুলসহ আদেশ দেন।

বিচার বিভাগ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের বিষয়ে নিজের ভূমিকার ব্যাখ্যা দিতে মোয়াজ্জেম হোসেনকে ১৪ মে সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুসারে আজ সকালে মোয়াজ্জেম হোসেন আদালতে হাজির হন।

মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদনটি দাখিল করে শুনানিতে অংশ নেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল ও মো. রুহুল কুদ্দুস প্রমুখ। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন শুনানিতে অংশ নেন। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

শুনানিতে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘তাঁর (মোয়াজ্জেম হোসেন) কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এটাকে জাস্টিফাই করছি না। নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা চেয়ে আবেদন করেছেন।’

আদালত বলেন, কী চেয়েছেন?

তখন জয়নুল আবেদীন বলেন, আদালত অবমাননা থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে।

এ সময় আদালত বলেন, ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে আদেশের জন্য বিষয়টি আসবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রচারিত বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ গত ২৫ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। পরে প্রধান বিচারপতির আদেশ অনুসারে বিষয়টি হাইকোর্টের ওই বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার রুল দেন। ব্যাখ্যা দিতে মোয়াজ্জেম হোসেনকে আদালতে সশরীর হাজির হতে আদেশ দেন।

গত ২৯ এপ্রিল দেওয়া আদেশে হাইকোর্ট বলেন, ভিডিও ক্লিপে আদালত অবমাননাকর মন্তব্য রয়েছে। ওই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি (মোয়াজ্জেম হোসেন) সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট বিচারপতি ও পুরো বিচার বিভাগকে অবমাননা করেছেন।

রুলে কেন মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যধারা গ্রহণ করা হবে না এবং আদালত অবমাননার জন্য কেন তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

একই সঙ্গে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ওই বক্তব্যের ভিডিও লিংক ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের আদেশ অনুসারে ইউটিউব থেকে ওই ভিডিও লিংকটি সরানো হয়েছে।’