উচ্চ প্রবৃদ্ধি, বৈষম্যবাদী বিকাশ এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা

গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের সমাজ অর্থনীতির পুঁজিবাদী রূপান্তর ঘটেছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। প্রথাগত বিচারে ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’র অনেকগুলো দিকই চিহ্নিত করা যায়। যেমন অর্থনীতির আকার বেড়েছে অনেক, কংক্রিট অবকাঠামোর বিস্তার ঘটেছে, জিডিপি বেড়েছে বহুগুণ, আমদানি-রপ্তানির উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে, সড়কপথের বিস্তার ঘটেছে অনেক, পরিবহন ও যোগাযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে, বহুতল ভবন বেড়েছে দ্রুত, রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে পোশাকশিল্প বড় সাফল্য তৈরি করেছে, প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার বিশাল মজুত তৈরি করেছে, প্রতিষ্ঠান ও অর্থনৈতিক তৎপরতায় ক্ষুদ্রঋণ ও এনজিও মডেল অনেক বিস্তৃত হয়েছে, নগরায়ণ বেড়েছে, দেশের মধ্যে এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও সচলতা বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির গুণগত পরিবর্তন বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে অনেক নতুন উপাদান যোগ করেছে। অনেক পেশা নাই হয়ে যাচ্ছে আবার অনেক পেশা নতুন যোগ হয়েছে।

অনলাইন যোগাযোগের উল্লম্ফনে গ্রাম-শহরের বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবনযাপন ও অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক তৎপরতায় এর প্রভাব পড়েছে ব্যাপক মাত্রায়। অসংখ্য মানুষের দৈনন্দিন জীবন এখন মুঠোফোন, ইন্টারনেট, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ইউটিউব, ওটিটি, বিকাশ, নগদনির্ভর হয়ে গেছে। অনলাইন ব্যাংকিং, অনলাইন সেমিনার-আলোচনা-পড়াশোনা, অনলাইন কেনাবেচা ব্যবসা-বাণিজ্য, অনলাইন সাংগঠনিক তৎপরতা, অনলাইন ধর্মীয় প্রচার দিনে দিনে বেড়েছে বহুগুণ। অনলাইন-অফলাইন বেচাকেনায় কম্পিউটার, মোবাইল, ইন্টারনেট, টিভি ইত্যাদির ব্যবসার প্রসার ঘটেছে, যার অনেকগুলোই আমদানি করা পণ্যের ওপরই নির্ভরশীল। বেসরকারি ক্লিনিক, ল্যাবরেটরি ও হাসপাতাল, বেসরকারি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও, কনসালট্যান্সি ফার্ম ইত্যাদির বিস্তার ঘটেছে অনেক। এ সময়ে সিনেমা হল কমেছে, সিনেপ্লেক্স হয়েছে কিছু; পাঠাগার, থিয়েটার হল, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সেভাবে বাড়েনি, কিন্তু বহুগুণ বেড়েছে দেশি-বিদেশি খাবারের দোকান, শপিং মল; পাবলিক বাস বেড়েছে কিছু, কিন্তু তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে প্রাইভেট গাড়ি। সমাজে ধর্মচর্চা বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি।

তবে জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধি বা কথিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যেভাবে ঘটছে, তার সামাজিক ও পরিবেশগত মূল্য অনেক বেশি। যেমন যে দশকে জিডিপির প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হারে ঘটেছে, সেই সময়ে বন বিনাশের হার দেখা গেছে সবচেয়ে উঁচু। নদী-নালা, খাল-বিল ও বনদূষণ, দখল ও বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। এ সময়েই দেশে একটি অতি ধনিকগোষ্ঠীর আবির্ভাব হয়েছে। তাদের বিত্তবৈভব যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন মাথা গণনায় দারিদ্র্যের প্রচলিত সংজ্ঞা বা কোনোভাবে টিকে থাকার আয়সীমার নিচে মানুষের সংখ্যা চার কোটির বেশি। যদি দারিদ্র্যসীমায় শিক্ষা, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, মানবিক মর্যাদার প্রশ্ন যুক্ত করা হয় তাহলে দেখা যাবে শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই অমানবিক জীবনে আটকে আছেন। গত এক বছরেও দারিদ্র্য ও বৈষম্য বেড়েছে।

গত কয়েক দশকে জনসংখ্যার তুলনায় খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে চার গুণের বেশি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষের যথেষ্ট পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের সংস্থান হয়নি। দেশে কৃষকদের জীবনও বহু দিক থেকে বিপন্ন। ফসলের দাম, অনিশ্চয়তা, বিষের মধ্যে বসবাস, দখল-দূষণ সবই তাদের অস্থির করে রাখে। টিকে থাকার জন্য তাদের খুঁজতে হয় নতুন নতুন অবলম্বন। শিক্ষা ও চিকিৎসার বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে ব্যাপক মাত্রায়। দোকানদারি অর্থনীতির উপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের প্রসার ঘটছে, যেখানে বিজ্ঞান, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস বিষয়ে মৌলিক জ্ঞানচর্চা বাহুল্য জ্ঞান করা হয়। আশা-আকাঙ্ক্ষা ও বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে বাজার, ভোগবাদিতা ও নিয়তিবাদিতার প্রভাব বেড়েছে।

বৈষম্যের বিরোধিতা করে যে গণ–অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেই বৈষম্য দূর করার পথে আমরা কতটুকু এগোলাম?
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের এক কোটির বেশি মানুষ এখন প্রবাসী শ্রমিক। তাঁদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হলেও অধিকাংশের জীবন ও জীবিকা অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার শিকার। দেশের ভেতর ৮৫ শতাংশ কর্মক্ষম মানুষই এখন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ওপর নির্ভরশীল। রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, বাস-ট্রাক, সিএনজি, টেম্পোসহ বিভিন্ন পরিবহন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, ছোট-বড় দোকানসহ ‘টুকটাক অর্থনীতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমজীবী মানুষের প্রধান কর্মক্ষেত্র। বেশির ভাগ কাজ অস্থায়ী, অনিয়মিত ও মজুরি খুবই নিম্নমাত্রার। দেশে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি এখনো অনেক দূরের বিষয়। শ্রমিক, শিক্ষকসহ প্রায় সব পেশাতেই মজুরি-বেতন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নিচের দিকে। দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় উচ্চ ব্যয় জনসংখ্যার একটি বড় অংশের জন্য খুবই বিপদের কারণ। স্বজনের চিকিৎসা বা সন্তানদের শিক্ষিত করাতে গিয়ে অনেকেই দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।

এসব কারণে সমাজে শ্রেণিবৈষম্যের বৃদ্ধি ঘটেছে উৎকটভাবে। জিডিপিতে জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের অংশীদারত্ব কমে গেছে এবং শীর্ষ ১০ শতাংশের হাতে আয় ও সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়েছে। যার সিংহভাগ আরও শীর্ষ ১ শতাংশের দখলে। এদের কারণে দেশের বিপুল সম্পদ লুণ্ঠিত ও পাচার হয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে, বারবার স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে আটকে গেছে দেশ। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনে অনিশ্চয়তা, বঞ্চনা, জুলুম অব্যাহত থাকছে।

সামাজিক বৈষম্যের আরেকটি বড় দিক হচ্ছে লিঙ্গবৈষম্য। গত কয়েক দশকে সব ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ ও দৃশ্যমান সচলতা বেড়েছে। শহর ও গ্রামে সরাসরি মজুরি শ্রমিক হিসেবে নারীর উপস্থিতি এখন তুলনায় অনেক বেশি। মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদেরও উপার্জনমুখী কাজে অংশগ্রহণ বেড়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে মেয়েদের সাফল্য বেশি হলেও তার ধারাবাহিকতা দেখা যায় না। এই থেমে যাওয়া বা ঝরে যাওয়ার পেছনে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, অনুশাসন, নারীবিদ্বেষী মতাদর্শিক আধিপত্য কাজ করে। আইনগত বিধিব্যবস্থাও বৈষম্যমূলক। এখনো সম্পত্তি-সন্তানের অধিকার, খেলাধুলা-কর্মসংস্থান এবং চলাফেরার পথে নানা প্রতিবন্ধকতা ছড়ানো। গ্রাম-শহরে জমি, কাজ ও আশ্রয় থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়া ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাদের শিশু ও নারীর অবস্থা তুলনায় আরও বেশি নাজুক। লিঙ্গীয় বৈচিত্র্য হুমকির মুখে। নারীর সচলতা–সক্রিয়তাবিদ্বেষী বিভিন্ন গোষ্ঠীর হামলা–হুমকির পাশাপাশি ঘরে-বাইরে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনাও বড় উদ্বেগের বিষয়।

আরেকটি বৈষম্যের এলাকা আমরা দেখি জাতিগত-ভাষাগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে কয়েক দশকে বহু দফা সংশোধনী হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়া অন্য জাতিসত্তা ও ভাষাভাষীর অস্তিত্ব সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত নয়। উপরন্তু তাদের জমি, ভাষা, সংস্কৃতি—সবকিছুই দখলদারদের থাবার মুখে, আছে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার হুমকি।

সামাজিক বৈষম্যের আরেক বড় ক্ষেত্র ধর্মীয় বৈষম্য, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জন্য অশান্তি, বিদ্বেষ, সহিংসতার অন্যতম উৎস। সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্ম পরিচয়ই রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি হবে, এই হুংকার বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের জনগণকে ক্ষতবিক্ষত করছে বারবার। বৈচিত্র্যের ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। প্রকৃতপক্ষে এতে সংখ্যাগুরু গোষ্ঠী যে নিরাপদ থাকে, তা নয়; ভিন্ন ধর্মের মানুষই যে শুধু বৈষম্যের শিকার হয়, তা নয়। একই ধর্মের মধ্যেও সংখ্যালঘু বা দুর্বল গোষ্ঠী বৈষম্য-নিপীড়নের শিকার হয়। ভিন্নমত, ভিন্ন তরিকা, ভিন্ন ধর্মের দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটানো এ রকম বৈষম্যবাদী ব্যবস্থার ফলাফল।

আগেই বলেছি, বনজঙ্গল, সরকারি জমি, সাধারণ সম্পত্তি, নদী-নালা, খাল-বিল, খোলা মাঠ—সবই এখন দখলের লক্ষ্যবস্তু। বলা বাহুল্য, এই দখল-সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং অপরাধমূলক তৎপরতা রাষ্ট্রীয় নীতিমালা ও পৃষ্ঠপোষকতার মধ্যেই সংঘটিত হয়। এগুলো তাই বিচ্ছিন্ন ঘটনাও নয়। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, জাইকার হাত ধরে নয়া উদারতাবাদী বা পুঁজিপন্থী অর্থনৈতিক সংস্কারের নীতিমালায় সব সাধারণ সম্পত্তির মুনাফামুখী দখলের পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব নীতির কারণেই গত কয়েক দশকে কয়েকটি গোষ্ঠীর হাতে বিপুল সম্পদ কেন্দ্রীভূত হতে পেরেছে। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ, বিদ্যুৎ খাত, অবকাঠামো, কৃষি, বন্দর বহুজাতিক পুঁজির জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। উন্নয়নের নামে প্রাণবিনাশী প্রকল্প এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তির ধারা এখনো অব্যাহত আছে। সাম্রাজ্যবাদী সামরিক-বাণিজ্যিক প্রকল্প আরোপের চেষ্টা এখন বেড়েছে।

আমরা দেখছি জনস্বার্থ ও প্রাণ–প্রকৃতিবিরোধী বন্দোবস্তে একদিকে ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠীর জৌলুশ, অন্যদিকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠের দারিদ্র্য ও বঞ্চনার বিভীষিকা। পরিচয়ের রাজনীতির দাপট বৃদ্ধির ফলে আমরা দেখছি শুধু (ধর্মীয়, লিঙ্গীয় বা জাতিগত) পরিচয়ের কারণে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার জাল। দেখছি একদিকে সম্ভাবনার বিকাশ অন্যদিকে দেশি-বিদেশি দখলদারদের স্বার্থে উল্টো যাত্রার কর্মসূচি। এগুলো একটি নির্মম বৈপরীত্যের মধ্যে বাংলাদেশকে নিক্ষেপ করেছে। দেশে এযাবৎ অনেক সামরিক-নির্বাচিত-অনির্বাচিত সরকারের পরিবর্তন হয়েছে; কিন্তু এসব নীতির ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি, নতুন কোনো গতিমুখ সৃষ্টি হয়নি। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ও প্রত্যাশা নিয়ে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের চিন্তা ও উদ্যোগে এর কোনো পরিবর্তনের চিহ্ন পাওয়া যায় না।

বাংলাদেশে রাষ্ট্ররাজনীতিতে এখন যে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ আছে। গত সরকারের সময় সমাজের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক— সব ক্ষেত্রে একদলীয় আধিপত্যের আড়ালে সব রকম বৈষম্যবাদী, জাতিবিদ্বেষী, সাম্প্রদায়িক, নারীবিদ্বেষী যে অপশক্তিগুলোর বিস্তার ঘটেছে, তারা এখন অনেক বেশি দাপট নিয়ে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করছে। এরা মাজার–দরবার ভাঙচুর করছে, মন্দির–পূজামণ্ডপে হামলা করছে; শিল্পকর্ম, ম্যুরাল, ভাস্কর্য ভাঙছে; গান-নাটক উৎসব বন্ধ করতে মব সন্ত্রাস চালাচ্ছে, নারীর স্বাধীন চলাফেরায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে, সংখ্যালঘু জাতি ও ধর্মের মানুষদের আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের ব্যবস্থা করছে। উদ্বেগ ও ক্ষোভ আরও বেশি হওয়ার কারণ, এসব হামলা, সন্ত্রাস, ভাঙচুর ঘটলে সরকারকে হয় নিষ্ক্রিয় দেখা যাচ্ছে অথবা এগুলোর পেছনে দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের সরাসরি সমর্থন। বৈষম্যবাদী রাজনীতির দাপট বাড়ছে, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী মতাদর্শকে মহিমান্বিত করে জোরজবরদস্তি, ট্যাগিং, মব ভায়োলেন্স, নারী ও জনবিদ্বেষী তৎপরতা দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন মাত্রায়।

মনে রাখতে হবে, বৈষম্য আর বৈচিত্র্য এক কথা নয়। সমাজ, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির বৈচিত্র্য আমাদের শক্তির জায়গা। এই বৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে এবং সব রকম বৈষম্যের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। সমাজে যে বৈষম্য, নিপীড়ন ও আধিপত্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রবল আকাঙ্ক্ষা আছে, তার চিহ্ন দেয়ালে দেয়ালে তুলে ধরেছেন এ সময়ের কিশোর-তরুণেরা। তাকে তাত্ত্বিক ও সাংগঠনিক শক্তিতে পরিণত করাই এখন আমাদের কাজ।

আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা