রাখাইনে সংঘাত থামেনি, বাংলাদেশে আশ্রয় আরও এক বিজিপি সদস্যের

রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীফাইল ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে সংঘাত এখনো থামেনি। বুধবারও কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমার থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে এসেছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের চাকঢালা সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) এক সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহ জালাল বলেন, বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে হোয়াইক্যং এলাকায় ভূকম্পন দেখা দেয়। দুই মাস ধরে এলাকার মানুষ মর্টার শেলের আতঙ্কে রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার যে এলাকা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, সেটি রাখাইন রাজ্যের বলিবাজার ও কাওয়ারবিল এলাকা। টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালীর বিপরীতে নাফ নদীর ওপারে এলাকা দুটি অবস্থিত। ওই এলাকায় ব্যারাকসহ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা রয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের গণসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজ নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বিজিপির এক সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মঙ্গলবার আশ্রয় নেন ৬৪ জন। এর আগেও কয়েক দফায় বিজিপি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যসহ অনেকে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বর্তমানে সব মিলিয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন ২৬১ জন। তাঁদের নাইক্ষ্যংছড়ির ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

বিজিবি সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করা ২৬১ জনের বাইরেও মিয়ানমারের চলমান সংঘাতের মধ্যে আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠানো হয়েছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিস্ফোরণের কারণে টানা দুই মাস টেকনাফ উপজেলার সাত হাজার জেলে নাফ নদীতে মাছ শিকারে নামতে পারছেন না। নাফ নদীর তীরের জমিতে চাষাবাদ ও কাঁকড়া আহরণ বন্ধ রেখেছে আরও সাত হাজার মানুষ। চরম অর্থসংকটে তাঁদের দিন কাটছে।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।