পাহাড়ে হত্যা ও ঢাবিতে হামলার বিচারের দাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে সাবেক ছাত্রনেতা বিপুল চাকমাসহ চারজনকে হত্যা এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশ থেকে ক্যাম্পাসে ভাস্কর্য নীতিমালা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড বন্ধ করারও দাবি জানানো হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ হয়। রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংবলিত মেট্রোরেলের অস্থায়ী প্রতিকৃতি বসানো ও সরানো নিয়ে উত্তেজনা থেকে সম্প্রতি ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের দুই দফায় মারধর করেছে ছাত্রলীগ।

রাজু ভাস্কর্যে আজকের সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়নে নতুন করে সাহসের সঞ্চার হয়েছে। ছাত্র ইউনিয়ন যতক্ষণ জনগণের পক্ষে লড়াই করবে, সেই লড়াইয়ের সঙ্গে আমরা সবাই থাকব। তাদের তিন দফা দাবির প্রতি সংহতি জানাচ্ছি। পাহাড়ে নৃশংসভাবে যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।’

বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও ছাত্র ফেডারেশনের (জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল) কেন্দ্রীয় সভাপতি মিতু সরকার বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বহুদিন ধরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস করছে। আওয়ামী লীগের পতন অচিরেই হবে।’ ছাত্র ইউনিয়নসহ বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক হামলার তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তিনি।

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক বলেন, পাহাড়-সমতলের নিপীড়ক গোষ্ঠী একই সুতায় গাঁথা, আবার নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইও একই সুতায় গাঁথা।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদেকুল ইসলাম বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে আওয়ামী লীগ। ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন জায়গায় তারা গায়ের জোর দেখাতে চায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় থাকলে এটা তারা করতে পারত না।

ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, সাধারণ মানুষের মতামতের কোনো তোয়াক্কাই করে না এই সরকার। স্বাধীন চিন্তা ও মতপ্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। নিপীড়নের মধ্য দিয়ে দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন প্রয়োজন।

ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজীদ হায়দারের সঞ্চালনায় সমাবেশে মধ্যে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদের (মার্ক্সবাদী) নেতা জয়দীপ ভট্টাচার্য, ছাত্র ফেডারেশনের (গণসংহতি আন্দোলন) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শুভাশিস চাকমা প্রমুখ বক্তব্য দেন।