বিএনপিই দেশে ভোট কারচুপি করেছিল: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপিই দেশে ভোট কারচুপি শুরু করেছিল, যা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তন করেছে। নির্বাচনের জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন সফররত যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। বৈঠকে এই মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সব সময়ই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য লড়াই করেছি। এবং ইতিমধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করেছি।’
উজরা জেয়া বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকারকে সহায়তা করতে তাঁর দেশ নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ‘কোনো দলের প্রতি আমাদের কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব সময়ই জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকারের জন্য লড়াই করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি ও তার মিত্রদের নৃশংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অগ্নিসংযোগের কথা স্মরণ করেন, যাতে ৫০০ মানুষ নিহত হয়েছিল।
শেখ হাসিনা তাঁর ওপর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করেন। তখন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে তাঁকে রক্ষা করেছিলেন।
সফররত মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, তিনি ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
উজরা জেয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপারেশনাল খরচের জন্য প্রায় ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে। বাংলাদেশে এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিনি শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
উজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশের আর্থিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে দেশের দুটি ভিন্ন স্থানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখন শিবিরগুলোতে মানব পাচার ও অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য খুবই উদ্বেগজনক।
শ্রম ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় উজরা জেয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শ্রম সংস্কার উদ্যোগে বাংলাদেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে শিল্পমালিকদের উদ্বুদ্ধ করেছেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।