রাজশাহীতে শতবর্ষী গাছ না কেটে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি

রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের বিপরীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী জেলা পরিষদ। সে জন্য কাটা পড়বে এই গাছগুলো। আজ বিকেলে তোলাছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীতে শতবর্ষী গাছ না কেটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলছেন, চিহ্নিত গাছগুলোর মধ্যে কোনোটির বয়স ১০০ বছর, কোনো কোনো গাছের বয়স তার চেয়েও বেশি। শতবর্ষী এসব গাছ রাজশাহীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে নগরবাসীর কাছে গাছগুলো স্বস্তির আশ্রয় হিসেবে কাজ করছে। এসব গাছ না কেটে শহীদ মিনার নির্মাণের অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
আজ বৃহস্পতিবার পরিবেশসচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া এক পত্রে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এমন দাবি জানিয়েছেন।

ওই পত্রে বলা হয়, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের বিপরীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী জেলা পরিষদ। শহীদ মিনারটি বানাতে গিয়ে ১০টির বেশি শতবর্ষী গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোন কোন গাছ কাটা হবে, সেটিও চিহ্নিত করা হয়েছে।
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মতে, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর রাজশাহী শহরে একটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এমন একটি শহীদ মিনার নির্মিত হলে নতুন প্রজন্ম ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের সঙ্গে পরিচিত হবে। তবে তা শতবর্ষী গাছের বিনিময়ে হতে পারে না। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় শতবর্ষী এ গাছগুলোকে রেখে শহীদ মিনার নির্মাণ করাই হবে যৌক্তিক উদ্যোগ।
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে বিদ্যমান শতবর্ষী গাছ কাটার সব উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে গাছগুলো রেখে শহীদ মিনার নির্মাণের অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে চিহ্নিত শতবর্ষী গাছগুলোকে জাতীয় ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে পত্রে সই করেছেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল, নিজেরা করি–এর সমন্বয়কারী খুশী কবির, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নগর–পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার, নদী ও পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, রাজশাহীর পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মাহবুব টুংকুসহ অন্যরা।