অতি ঝুঁকিপূর্ণ বিপণিবিতান পুড়ল আগুনে

ফায়ার সার্ভিস ২০১৯ সালে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটকে অগ্নিকাণ্ডের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল।

  • মার্কেটের তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। কমপক্ষে ২৫০টি দোকান পুড়ে গেছে।

  • ব্যবসায়ীদের প্রাথমিক ধারণা, ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।

  • ফায়ার সার্ভিসের তালিকায় অগ্নিকাণ্ডের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট।

  • আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২৪ কর্মীসহ ৩২ জন আহত।

শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত বেচাকেনা করেছেন রাজধানীর ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। গতকাল শনিবার ভোরে আগুনে পুড়ে শেষ দোকানের সব মালপত্র। আগুনে সব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের মাত্র ১১ দিন পর এবার পুড়ল ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ)। তিনতলা এ বিপণিবিতানের তৃতীয় তলায় গতকাল শনিবার ভোরে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তবে গত রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি।

ভয়াবহ আগুনে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় কমপক্ষে ২৫০টি দোকান পুড়ে গেছে। বেশির ভাগই কাপড়ের দোকান। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকার মতো হবে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। অগ্নিকাণ্ডে কেউ মারা যায়নি। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২৪ কর্মীসহ ৩২ জন আহত হয়েছেন। তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিয়েছেন।

নিউমার্কেট লাগোয়া তিনতলা ভবনটিই নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ)। এ মার্কেটের উল্টো দিকে গাউছিয়া ও চাঁদনী চক মার্কেট। মাঝে মিরপুর সড়ক। এ সড়কের ওপর দিয়ে নির্মিত পদচারী–সেতু (ফুটওভার ব্রিজ) পার হয়ে নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় যাওয়া যায়।

ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট আগে থেকেই ফায়ার সার্ভিসের তালিকায় অগ্নিকাণ্ডের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ২০১৯ সালে ফায়ার সার্ভিস ঢাকার বিপণিবিতানগুলো পরিদর্শন করে ১ হাজার ৪৮টি বিপণিবিতানটিকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি বিপণিবিতানও অতি ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় ছিল। ফায়ার সার্ভিস বলছে, একাধিকবার চিঠি দিলেও ঝুঁকিপূর্ণ এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ বিপণিবিতানগুলোর সমস্যা সমাধানে সিটি করপোরেশন বা সংশ্লিষ্ট বিপণিবিতানগুলোর মালিক সমিতি কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার কোনো বিপণিবিতান ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পর নিয়মিত চিঠি দিয়ে ঝুঁকিমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু এ বিষয়ে কেউই কর্ণপাত করেন না। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকার বিপণিবিতানগুলো আবারও নতুন করে পরিদর্শন করা হচ্ছে। বিপণিবিতান কর্তৃপক্ষ যদি অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত না করে, তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সচেতনতা ছাড়া এ ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়।

ব্যবসায়ীদের মালপত্র বের করে আনছেন পুলিশের এক সদস্য
ছবি: প্রথম আলো

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে প্রায় ১ হাজার ২০০ দোকান রয়েছে। আগুনে মোট কতটি দোকান পুড়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর কারণ, তৃতীয় তলায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছাড়া গত রাত ১১টা পর্যন্ত কেউ ঢুকতে পারেননি। তাই ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন গতকাল রাত নয়টার দিকে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ২০০টির বেশি দোকান পুড়েছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন। ২৫০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হতে পারে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গতকাল ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুতই আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় তলার কিছু দোকানও আগুনে পুড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ২৮টি ইউনিট কাজ করে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে গত রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভেনি। তখনো ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছিল।

এর আগে ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। পাশাপাশি লাগোয়া চারটি বিপণিবিতানের সমন্বিত নাম বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স। সেদিন বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের পাশাপাশি আরও চারটি মার্কেট (বিপণিবিতানে) আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজারের ২ হাজার ৯৬১টি দোকান পুড়ে গেছে। এ ছাড়া মহানগর মার্কেটের ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের ৫৯টি এবং বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সের ৩৪টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৩০৩ কোটি টাকা।

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের মাত্র ১১ দিনের মাথায় নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগার বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এর একটি কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, বঙ্গবাজারের মতোই নিউ সুপার মার্কেটেও ভোরবেলা আগুন লেগেছে। এ বিপণিবিতান ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার চার বছরে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে নাম উদ্ধৃতি করে কোনো ব্যবসায়ী কথা বলতে চাননি। তবে একজন ব্যবসায়ী বলেছেন, কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। সেগুলো স্থাপনের আগেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।

ঝুঁকি নিয়ে মালামাল বের করার চেষ্টা

আগুন লাগার খবর পেয়ে গতকাল ভোরেই ব্যবসায়ীরা ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে ছুটে আসেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যখন আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন, তখন কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে বিপণিবিতানে ঢুকে কিছু মালামাল বের করে আনার চেষ্টা করেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো ভবন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ার পর ব্যবসায়ীদের আর ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তখন তাঁরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। আগুন লাগার সাড়ে তিন ঘণ্টা পর তা নিয়ন্ত্রণে এলে ব্যবসায়ী এবং দোকানকর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে আবার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। বিশেষ করে তিনতলা এ বিপণিবিতানের দোতলা ও নিচতলা থেকে কিছু মাল বের করে আনেন তাঁরা। অনেক ব্যবসায়ী এবং দোকানকর্মী নিজ নিজ দোকানের বাইরের অংশ এবং ভেন্টিলেটর ভেঙে মালামাল বের করেন। দোকান থেকে মালামাল বের করে আনতে সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ২৫ জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলেছেন, ঈদের আগে নিউ সুপার মার্কেটের দোকানগুলো গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। গত শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় বেশির ভাগ দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। অনেক দোকানে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত বেচাকেনা চলেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে চারটার মধ্যে দোকান বন্ধ করে বাসায় যান ব্যবসায়ীরা। এর দুই ঘণ্টার মধ্যে মুঠোফোনে নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার খবর পান তাঁরা।

আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী হুমায়ূন কবির। মার্কেটের তৃতীয় তলায় তাঁর চারটি দোকান (কাপড়ের) রয়েছে। এসব দোকানে এক কোটি টাকার বেশি মালামাল ছিল বলে তিনি জানান। গতকাল সকালে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। এ সময় তিনি আরও বলেন, আগুনের মধ্যেই দোকান থেকে মালামাল বের করতে ঝুঁকি নিয়ে কয়েক দফা মার্কেটের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে পরে আর সাহস পাননি। শুধু অসহায় হয়ে আগুনে মালামাল পুড়তে দেখেছেন।

ব্যবসায়ীদের সন্দেহ-ক্ষোভ

নিউ সুপার মার্কেটের ঠিক সামনেই মিরপুর সড়কে একটি পদচারী–সেতু রয়েছে। এ সেতু দিয়ে মার্কেটের তৃতীয় তলায় যাওয়া যায়। সেতুটি এক বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। তবে এত দিন সেতুটি অপসারণের কোনো উদ্যোগ ছিল না। সাত দিন আগে সিটি করপোরেশন পদচারী-সেতুটি ভাঙার উদ্যোগ নেয়। তবে ঈদের আগে সেতুটি ভাঙতে নিষেধ করেন নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। গতকাল ভোরে সিটি করপোরেশের তত্ত্বাবধানে পদচারী–সেতু অপসারণের কাজ শুরু হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পদচারী–সেতুতে বিদ্যুতের যে সংযোগ রয়েছে, তা মার্কেটের সঙ্গে যুক্ত। এ বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন না করে কাজ করার সময় আগুনের সূত্রপাত হয়।

ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) বণিক সমিতির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ভোর চারটার দিকে (সাহ্‌রির সময়) সিটি করপোরেশনের এক দল লোক মার্কেটের পূর্ব পাশের সিঁড়ি (পদচারী–সেতুর সঙ্গে যুক্ত) বিনা নোটিশে ভাঙতে আসেন। মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের অনেকবার নিষেধ করেন। কাজ করার আগে অন্তত বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ করে নিতে বলেন। সিটি করপোরেশনের লোকজন কারও কথা না শুনে সিঁড়ি ভাঙা শুরু করেন। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই হঠাৎ মার্কেটের নিচতলা ও তিনতলায় বিকট শব্দ হয় এবং ধোঁয়া বের হতে থাকে।

তবে ব্যবসায়ীদের এমন দাবির বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গতকাল বিকেলে এক বিবৃতিতে বলেছে, আগুন লাগার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের ওই কাজের কোনো সম্পর্ক নেই। আগুন লাগার আধা ঘণ্টা আগে তাঁদের কাজ শেষ হয়ে যায়। তা ছাড়া পদচারী–সেতু বিচ্ছিন্নকরণের স্থান থেকে ৪০০ ফুটের বেশি দূরে আগুন লেগেছে এবং সেতু বিচ্ছিন্নকরণের কাজে গ্যাস কাটার ব্যবহার করা হয়নি।

এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় আশপাশের ৪২টি বিপণিবিতানে গতকাল বিকেল পর্যন্ত বেচাকেনা বন্ধ ছিল। মিরপুর সড়কের সায়েন্স ল্যাব মোড় থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত ব্যারিকেড (প্রতিবন্ধক) দিয়ে রেখেছিল পুলিশ। ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের কারণে গতকাল ঢাকা নিউমার্কেট বন্ধ ছিল।

এর আগে গত ৫ মার্চ ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট থেকে ৩০০ মিটার দূরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এ বিস্ফোরণে ছয়জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার দুদিন পর ৭ মার্চ পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে আরেকটি ভবনের বেজমেন্ট বিস্ফোরণে ২৬ জনের মৃত্যু হয়।

একের পর এক আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনাগুলোর পেছনে নাশকতা বা অন্য কোনো কারণ আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অন্যদিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন বলেছেন, পরপর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। আর র‌্যাব বলছে, তাদের গোয়েন্দারাও বিষয়টি তদন্ত করছেন।  

ঈদের আগে বিপণিবিতানে আগুন লাগা রহস্যজনক বলে গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ধোঁয়ার কারণে আগুন নেভাতে সমস্যা

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছেন, পুরো ভবন কাপড়ে ঠাসা। ঈদকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি কাপড় মজুত করেছিলেন ব্যবসায়ীরা।

এমনকি দোকানগুলোর মেঝেতে, সামনের ফাঁকা জায়গাতেও কাপড় মজুত করা হয়। মার্কেটের তৃতীয় তলায় আগুনের ব্যাপ্তি ছড়ানোর সঙ্গে ধোঁয়ার তীব্রতা বেড়ে  যায়, যে কারণে ভেতরে ঢুকে আগুন নেভানোর কাজ করতে সমস্যা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ) লে. কর্নেল রেজাউল করিম গত রাত সাড়ে আটটায় ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, মার্কেটটির ফায়ার সেফটি সিস্টেম অত্যন্ত দুর্বল ছিল। ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশন থেকে একটি দোকান বরাদ্দ নিয়ে করিডরে (বারান্দায়) আরও দু-তিনটি ছোট ছোট দোকান দিয়েছিলেন। যার কারণে করিডরগুলো খুবই সংকীর্ণ হয়ে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে কাপড়ের মাধ্যমে আগুন ছড়িয়েছে।