জরুরি স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দরকার সহযোগিতা ও উদ্ভাবন

আইসিডিডিআরবির আয়োজনে এ সম্মেলনে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যক্তিরা অংশ নিচ্ছেন।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে গতকাল সোমবার ঢাকায় শুরু হয়েছে ‘এনআইএইচআর গ্লোবাল হেলথ সেন্টার সিম্পোজিয়াম’ । এর আয়োজক আইসিডিডিআরবিছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব স্বাস্থ্য এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে অবস্থান করছে, যেখানে সহযোগিতা ও উদ্ভাবনের সম্মিলনই পারে সবচেয়ে জরুরি স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে গতকাল সোমবার ঢাকায় শুরু হওয়া চার দিনের সম্মেলনে এ কথা উঠে আসে। ‘এনআইএইচআর গ্লোবাল হেলথ সেন্টার সিম্পোজিয়াম’ শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজক আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।

এতে সহযোগিতা করছে যুক্তরাজ্যের জনস্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার রিসার্চ (এনআইএইচআর)। বিশ্ব স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ সম্মেলনে পশ্চিম আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, ভারত-নেপাল, পাকিস্তান-আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে-ভারত-ইন্দোনেশিয়াভিত্তিক পাঁচটি গ্লোবাল হেলথ সেন্টারের ৬০ জন নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও স্বাস্থ্য খাতের পেশাদার যোগ দিয়েছেন।

এনআইএইচআরের গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ সেন্টারগুলো, যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য ও সমাজসেবা বিভাগ (ডিএইচএসসি) ও সংশ্লিষ্ট অন্য অংশীদারদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এ সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য। পাশাপাশি এতে স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে, যেখান থেকে অগ্রণী অন্তর্দৃষ্টি উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। আলোচনার কেন্দ্রে থাকছে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধির মতো অসংক্রামক রোগ (এনসিডি)। এসব রোগ মোকাবিলায় আরও কার্যকর লড়াই কীভাবে করা যায়, তা আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া পরিবেশগত পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব-সম্পর্কিত গবেষণা চালানোর জন্য আমি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো দেশের কথা ভাবতে পারি না। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বোঝার ক্ষেত্রে বাংলাদেশই সম্ভবত সবচেয়ে সমৃদ্ধ গবেষণাগার।’

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে পরিচালিত গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশে অসংক্রামক রোগসংক্রান্ত গবেষণায় বিনিয়োগ করছে। এটি হৃদ্‌রোগ, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ, ডায়াবেটিস, মানসিক ব্যাধি এবং অন্যান্য অসংক্রামক রোগ মোকাবিলা করতে সহায়তা করবে।’

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে অবস্থান করছি, যেখানে সহযোগিতা ও উদ্ভাবনের সম্মিলনই পারে আমাদের সময়ের সবচেয়ে জরুরি স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে। এই সম্মেলন বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসমতা ও গবেষণায় উৎকর্ষ অর্জনে এগিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকারের একটি প্রমাণ। আমরা একসঙ্গে উদ্ভাবনী সমাধানের পথ প্রশস্ত করছি, যা বিশ্ব স্বাস্থ্যের ভবিষ্যৎ গড়বে।’

আরও বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ও এনআইএইচআর গ্লোবাল রিসার্চ সেন্টার ফর নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেস অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল চেঞ্জের এদেশীয় পরিচালক আলিয়া নাহিদ, গ্লোবাল হেলথ রিসার্চের জন্য এনআইএইচআর কর্মসূচি পরিচালক কারা হ্যানসন প্রমুখ।