কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি মানুষকে বেকার বানাবে

আগাম প্রস্তুতি না থাকলে প্রযুক্তি পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বেকারত্ব আগামী দিনে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

  • যন্ত্র যদি এত গুছিয়ে লিখতে পারে; তাহলে সম্পাদকের প্রয়োজন কী—এই প্রশ্ন অনেকের মনে উঁকি দিয়েছে।

  • আশঙ্কা করা হচ্ছে, শ্রমঘন তৈরি পোশাকশিল্পের ৬০ শতাংশ শ্রমিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে বেকার হবেন।

  • নীতিনির্ধারকদের উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে।

নাম তাঁর ছিল জন হেনরি

ছিল যেন জীবন্ত ইঞ্জিন

….

আশঙ্কা হেনরির মেশিনের কাছে বুঝি,

পেশি নেবে পরাজয় মানি

….

আমি মেশিনের হব প্রতিদ্বন্দ্বী

জন হেনরি বলে বুক ঠুকে।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশ পুরোনো ও শ্রোতাপ্রিয় একটি লোকগান এটা। বাংলায় অনুবাদ করেছেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস। পরে গণসংগীত হিসেবে জনপ্রিয়তা পায়। যান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে পেশিশক্তির লড়াই ও এর মাহাত্ম্য নিয়ে এই গান। মূলকথা, যন্ত্র সব কাজ কেড়ে নেবে। শ্রমজীবীদের বেকার করবে। মানুষের শ্রমকে বাহুল্যে পরিণত করবে।

বেকার হওয়ার এই ভয় আজকের নয়, যান্ত্রিক সভ্যতার শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার কৃষ্ণাঙ্গ রেলশ্রমিক হেনরির মধ্যে এই ভয় দেখা গেছে। এরও আগে রোমান সভ্যতার সময় এমনটা দেখা গেছে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ভারী যন্ত্রপাতি অন্য জায়গায় নেওয়ার জন্য কম খরচের আধুনিক যন্ত্রের (চাকা) বদলে প্রজার পেশিশক্তির ওপর নির্ভর করতেন রোমান সম্রাট ভেসপাসিয়ান। তাঁর মতে, যন্ত্রনির্ভরতা অনেক মানুষের কাজ হারানোর কারণ হবে। শাসক হিসেবে তিনি এটা হতে দিতে পারেন না।

আধুনিক উৎপাদনব্যবস্থায় একদম প্রাথমিক পর্যায়ে নেওয়া কৌশলগুলোর একটি লেবার সেভিং; নাকি ক্যাপিটাল সেভিং। অর্থাৎ মানুষের শ্রম নাকি যন্ত্র—উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোনটি বেশি ব্যবহার করা হবে, তা ঠিক করা। যেখানে মানুষ বেশি কিন্তু পুঁজি কম—সেখানে উৎপাদন করতে গিয়ে ভারী যন্ত্রপাতির ব্যবহার উপযুক্ত কৌশল নয়। তাই গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছেন, যন্ত্র যদি একদিন সত্যিই অনেক উন্নত হয়ে ওঠে, তখন আর মানুষের শ্রমের প্রয়োজন হবে না।

এই ভয় থেকেই ‘সাদা সাহেবের’ আনা বিশাল যন্ত্রকে হেনরি ও তাঁর সঙ্গে কাজ করা শ্রমিকেরা ‘শত্রু’ মনে করতেন। ব্রিটেনে শিল্পবিপ্লবের সময় লুডাইটরা (বস্ত্র খাতের শ্রমিকদের গুপ্ত সংগঠন। এর সদস্যরা কাজ হারানোর ভয়ে কারখানায় আনা যন্ত্র ভেঙে দিতেন) জীবিকার সুরক্ষায় সহিংস প্রতিবাদ করতেন। অ্যারিস্টটল থেকে হেনরি—তাঁদের সেই আশঙ্কা ও ভয় আজও বিদ্যমান। এখন আমরা উৎকণ্ঠা নিয়ে জিজ্ঞেস করি, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি আমাদের কাজ কেড়ে নেবে? আমাদের বেকার বানিয়ে দেবে?

ছাপাখানায় পালাবদল

কাজ হারানো নিয়ে পুরোনো সেই প্রশ্ন নতুন করে সামনে এনেছে চ্যাটবট নামের সফটওয়্যার। এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনায় থাকা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি মানুষের মতো কথাবার্তা চালাতে ও লিখতে পারে। কিন্তু যন্ত্র যদি এত গুছিয়ে লিখতে পারে; তাহলে লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সম্পাদকের প্রয়োজন কী—এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে অনেকের মনে উঁকি দিয়েছে। চলছে নানা গবেষণা। গবেষকেরা বলছেন, আশঙ্কা কিংবা সম্ভাবনা—যেটাই বলি না কেন, এর ইতিহাস ও বিবর্তন সরলরৈখিক না। এর সঙ্গে জড়িত সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি আর ইতিহাসের জটিল সম্পর্ক। প্রযুক্তি যতই আধুনিক ও উন্নত হোক, সেটিকে সফল হতে হলে এসব সম্পর্কের সমীকরণ মেলাতে হয়।

বছর তিনেক আগে এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণায় এই লেখক যুক্ত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল মিজৌরি ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক তাইয়াবুল হক (সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রত্যাশা সাহা ও আমি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশের ছাপাখানায় কাজ করা কর্মীদের পরিবর্তিত কর্মপরিবেশে খাপ খাওয়ানোর কৌশল নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন লিখি। এটি ২০২০ সালের জুনে তৃতীয় ‘এসিএম কনফারেন্স অন কম্পিউটিং অ্যান্ড সাসটেইনেবল সোসাইটিস’ শীর্ষক সম্মেলন উপস্থাপন করা হয়।

গত শতকের আশির দশকের শেষ দিকে দেশের প্রকাশনা শিল্পে কম্পিউটারের ব্যবহার শুরু হয়। এর ফলে ছাপাখানার টাইপসেটাররা (যাঁরা সিসার তৈরি অক্ষর দিয়ে কাগজে ছাপ দিতেন) ধীরে ধীরে কাজ হারাতে থাকেন। আজকের দিনে এসে মনে হতে পারে, এই কাজ হারানো কিংবা সিসার টাইপসেটের বদলে ছাপার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার স্বাভাবিক একটি ঘটনা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ছাপাখানায় কাজ করে আসা কর্মীদের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আদতে তা ছিল না। তাঁদের অনেকেই কম্পিউটারের ব্যবহারে বাধা দেন। একটা লম্বা সময় ধরে এসব কর্মী নিজেদের টাইপসেটের কাজও করেছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছাপাখানায় কম্পিউটার জায়গা করে নিতে থাকে। কাজ হারান অনেকে। বদলে যায় এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকের কর্মজীবন।

চাকরি হারানোর ঝুঁকি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জেরে যে বড় পরিবর্তনের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা মোকাবিলায় টাইপসেটারদের আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেওয়া জরুরি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাবে, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের পাঁচটি খাতে (তৈরি পোশাক, আসবাব তৈরি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত, পর্যটন ও চামড়াশিল্প) প্রায় ৫৪ লাখ মানুষ কাজ হারাবেন। এর মধ্যে শ্রমঘন তৈরি পোশাকশিল্পের ৬০ শতাংশ শ্রমিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে বেকার হবেন। কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে কাজ হারাবেন ৪০ শতাংশ শ্রমিক।

এর বাইরেও কাজ হারানোর ঝুঁকির তালিকায় রয়েছেন পরিবহনশ্রমিক। বিশ্বের অনেক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কয়েক বছরের মধ্যে চালকবিহীন গাড়ি চালানোর প্রযুক্তি পুরোদমে বাজারে ছাড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। এর ফলে বিশ্বের অনেক গাড়িচালক কাজ হারানোর ঝুঁকিতে পড়বেন। তাই আগামী দিনগুলোয় আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হবে, নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের উপযোগী পরিবেশ তৈরি এবং এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া।

প্রসঙ্গ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব

অতীতে যন্ত্র মূলত মানুষের শ্রমকে প্রতিস্থাপন করত। যেমন ক্যালকুলেটর ও কম্পিউটারের মাধ্যমে গণনা করা যায়, তবে চিন্তা করে মানুষই। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শক্তি ও চিন্তা—দুই জায়গায় মানুষকে সরাসরি প্রতিস্থাপন করবে। আবার এখন পর্যন্ত আসা প্রযুক্তি বেশ কিছু কাজকে অপ্রয়োজনীয় করে দিলেও নতুনভাবে আবার কর্মক্ষেত্র তৈরি করেছে। যেমন টাইপরাইটার কিংবা কম্পিউটার, রিকশা কিংবা অটোরিকশা; যা-ই হোক না কেন, এসব ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে মানুষই মানুষকে প্রতিস্থাপন করে। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারণ ছাড়া মানুষের পেশি ও মগজের প্রয়োজন পড়বে কি না, তা এখন বড় প্রশ্ন।

এ পরিস্থিতি অনুমানের বাইরে ছিল না। প্রায় শত বছর আগে ‘ইকোনমিক পসিবিলিটি ফর আওয়ার গ্র্যান্ড চিলড্রেন (১৯৩০)’ নিবন্ধে ব্রিটিশ তাত্ত্বিক জন মেইনার্ড কেইনস ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, প্রযুক্তির উন্নয়নে ২০৩০ সালের দিকে মানুষকে সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হবে না। অন্যদিকে জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্ক্সও ভাবতেন, যদি পুঁজিবাদীদের থেকে শ্রমিকেরা উৎপাদনযন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তবে কষ্টকর কাজ করার বদলে মানুষ আনন্দময় পরিবেশে চিন্তাশীল কাজ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে যন্ত্র ফ্রাঙ্কেনস্টাইন না হয়ে মানুষের আজ্ঞাবহ সহযোগী হবে।

পুরো ব্যাপারই নির্ভর করবে আদতে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতির ওপর। যেমন প্রাচীন রোমে চাকার পরিবর্তে শ্রমিকের পেশি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ছিল রাজনৈতিক। এমনকি কয়েক দশক আগেও আমাদের এই তল্লাটে চাকার বদলে পালকি ব্যবহৃত হতো। আমাদের গবেষণায় সুস্পষ্টভাবে দেখাতে সক্ষম হই যে সবচেয়ে আধুনিক ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক প্রযুক্তির উপস্থিতি সত্ত্বেও তা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে সব সময় গ্রহণযোগ্য হয় না।

কারখানায় রোবট কাজ করবে নাকি মানুষ, সেটি নির্ভর করে পুঁজির নিয়ন্ত্রকের সিদ্ধান্তের ওপর। যদি শ্রমের মূল্য অত্যধিক সস্তা হয়, তবে রোবটের বদলে মানুষকে খাটানোই লাভজনক। মানুষের খাবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিবর্তে সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি, সবার জন্য চিকিৎসা নিশ্চিত না করে আরও কত কঠোরভাবে মানুষকে তদারকির আওতায় আনা যায়, সেই প্রযুক্তির উন্নয়নের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক।

একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে রোবট দিয়ে উৎপাদন বাড়ালেই হবে না, ভোক্তারা বেকার হয়ে পড়লে উৎপাদিত পণ্য ও সেবা কেউ কিনবেন না। অন্যদিকে লাখ লাখ বেকারের যে সামাজিক ও রাজনৈতিক চাপ, তা অর্থনীতি ও রাজনীতিতে বড় আঘাত হানতে পারে।

বাংলাদেশে যদি কয়েক শ টাইপসেটার ছাপাখানায় কম্পিউটার ব্যবহারের বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেন, তাহলে লাখ লাখ পোশাকশ্রমিক ও গাড়িচালকের আন্দোলনের প্রভাব কতটা পড়তে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।

প্রস্তুতি থাকা জরুরি

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি না থাকলে প্রযুক্তি পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বেকারত্ব আগামী দিনে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। শ্রমিক-কর্মীদের প্রস্তুত হতে হবে নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার বিষয়ে। আর নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কৌশল নিয়ে।

শুরুতে আসা যাক শ্রমিকদের বিষয়ে। শ্রমিক বলতে শুধু প্রথাগত কায়িক শ্রমিকদের কথা বলা হচ্ছে না। যাঁরা অফিস-আদালতে কাজ করেন এবং নতুন যুগে তৈরি হওয়া প্রিক্যারিয়েটরাও (যাঁদের নিজস্ব কোনো ধরাবাঁধা চাকরি নেই। যেমন শরিকি যাত্রার যানবাহনের চালক, ডেলিভারি ম্যান ইত্যাদি) এর অন্তর্ভুক্ত।

কম্পিউটারের ব্যবহার শুরুর পরপর দেখা যায়, যাঁরা আগেভাগে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, তাঁরা পেশাজীবনে উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের পক্ষে নিজেদের উদ্যোগে এসব প্রশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব হয় না। সরকার-নিয়োগকারীদের এই প্রশিক্ষণ আয়োজনের দায়িত্ব নিতে হবে। নতুন প্রযুক্তির প্রতি ভীতি ও অনীহা কাটাতে উপযুক্ত পরিকল্পনা করতে হবে। আগে ধরে নেওয়া হতো, প্রযুক্তির পরিবর্তনে একজন শ্রমিকের জীবনে হয়তো একবারই বদল আসবে। কিন্তু এখন এটা চলমান প্রক্রিয়া হয়ে গেছে। তাই খাপ খাইয়ে নিতে সব সময় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হয়।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের কারণে যাঁরা কাজ হারাবেন, তাঁদের জন্য বাড়তি মুনাফার একটি অংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা, সর্বজনীন মূল আয়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বেকার ভাতার মতো ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। শ্রমিকদেরও নিজেদের অধিকার আদায়ে নতুন ধরনের শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে। টাইপসেটারদের আন্দোলন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তাঁদের বড় অংশই কোনো আইনি সহায়তা পায়নি। এই বিষয়েও প্রস্তুতি থাকা জরুরি।

চিন্তার সক্ষমতা মূল শক্তি

প্রাণী হিসেবে মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা চিন্তা ও কল্পনা করার সক্ষমতা; কায়িক শ্রম নয়। কিন্তু বিশ্বায়নের এই যুগে প্রযুক্তির সহায়তা পেয়ে আমাদের চিন্তা ও কল্পনার জায়গা অনেকটাই সরল ও সংকীর্ণ হয়েছে। এ কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহজেই আমাদের চিন্তা ও কল্পনার সীমা ধরে ফেলতে পারছে।

আগামী দিনে সব ক্ষেত্রে ‘আউট অব বক্স’ চিন্তা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তা না হলে আমরা আরও বেশি অনুমানযোগ্য প্রাণীতে পরিণত হতে থাকব। সে ক্ষেত্রে অবধারিতভাবে যন্ত্র বা রোবটের চেয়ে মানুষ বহুগুণ পিছিয়ে পড়বে, প্রতিযোগিতায় হারবে।

মানুষের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা খাপ খাইয়ে নিতে পারা। সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকলে বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যে চ্যালেঞ্জ, তা মোকাবিলা করে মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকাতেই রাখতে পারবে।