চার দিন কর্মবিরতির পর রোগীদের চিকিৎসাসেবা শুরু

চার দিন পর আজ বেলা তিনটা থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছেছবি: প্রথম আলো

চার দিন পর ২৫০ শয্যার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আজ রোববার বেলা তিনটা থেকে রোগীদের চিকিৎসাসেবা শুরু করেছেন চিকিৎসক-নার্সরা। দুপুরে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হলে আন্দোলনকারী চিকিৎসক-নার্স-কর্মচারীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন।

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি থাকা একজন রোগীর মৃত্যুর জেরে চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় বুধবার সকাল থেকে হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ ১৪টি ওয়ার্ডের রোগীরা অন্যত্র চলে যান। পুরো হাসপাতাল রোগীশূন্য হয়ে পড়ে।

এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে দৈনিক ১ হাজার ৮০০ জন রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন প্রায় ৮০০ রোগী।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হামলায় আহত চিকিৎসক সজীব কাজী বুধবার রাতে বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করলেও অন্য আসামিরা ধরা পড়েননি।

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, চিকিৎসক হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, তাঁদের ছবিসহ পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ, চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আহত চিকিৎসককে পরিপূর্ণ চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারীরা। তাতে কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন।

সংকট নিরসনে আজ রোববার দুপুরে আন্দোলনরত চিকিৎসক, নার্স-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ এবং সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশেকুর রহমান বলেন, বৈঠকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পক্ষে চিকিৎসক, নার্সদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ এবং হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়। বেলা তিনটা থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন চিকিৎসক, নার্স-কর্মচারীরা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, রোগীর দুর্ভোগ লাঘব এবং চিকিৎসক কর্মচারীদের নিরাপত্তায় বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে হাসপাতালে ১২ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া পুলিশের সার্বক্ষণিক টহল ও যৌথ বাহিনীর নজরদারি থাকবে।