খুলনার বিশেষ পিপি এক মাস আইন পেশা পরিচালনা করতে পারবেন না: হাইকোর্ট

হাইকোর্টফাইল ছবি

বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অবমাননাকর বক্তব্যের ঘটনায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য আইনজীবী জহিরুল ইসলাম পলাশকে এক মাসের জন্য আইন পেশা পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। জহিরুল খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)।    

স্বাভাবিক বিচারিক কার্যধারা বাধাগ্রস্ত করা ও খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ও হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ উপস্থাপনের পর গত ৩ এপ্রিল হাইকোর্টের একই বেঞ্চ আইনজীবী জহিরুল ইসলামের প্রতি স্বতঃপ্রণোদিত আদালত অবমাননার রুল দেন। কেন তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যধারা গ্রহণ করা হবে না এবং আদালত অবমাননার জন্য কেন তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়। ওই অভিযোগ বিষয়ে নিজের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে জহিরুল ইসলামকে ৭ মে সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ অনুসারে জহিরুল ইসলাম আজ আদালতে হাজির হন। ওই ঘটনার জন্য তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন দেন। আদালতে জহিরুলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।  

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ঘটনার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আইনজীবী জহিরুল ইসলাম। আদালত তাঁকে এক মাস আইন পেশা পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আইনজীবী ও পিপি হিসেবে এক মাস আইন পেশা পরিচালনা করতে পারবেন না। হাইকোর্ট শুনানির জন্য ১০ জুন পরবর্তী দিন রেখেছেন। সেদিন জহিরুল ইসলামকে আদালতে হাজির থাকতে হবে।’

জহিরুল ইসলামের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদনের ওপর ১০ জুন শুনানি হবে। আদালত অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ কয়েকজন আইনজীবীর মতামতও শুনবেন।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, আদালত অবমাননা এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে মিথ্যা ও হেয় প্রতিপন্নমূলক ভিডিও প্রকাশের অভিযোগ নিয়ে প্রধান বিচারপতি বরাবর গত ৩১ মার্চ আবেদন দেন খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে দেওয়া আবেদনে গত ২৫ মার্চ একটি মামলা শুনানির সময় এজলাসে জহিরুল ইসলাম পলাশ উচ্চ স্বরে কথা বলা, বিচারিক স্বাভাবিক কার্যধারা বাধাগ্রস্ত করা, বিচারকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা, সোশ্যাল মিডিয়ায় ন্যক্কারজনকভাবে উপস্থাপন করে হেয় প্রতিপন্ন করার কথা উল্লেখ করা হয়। ২ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির আদেশ অনুসারে বিষয়টি হাইকোর্টের ওই বেঞ্চে উপস্থাপিত হয়।