ঢাকার আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল হত্যা মামলায় ৩৩ জনের বিচার শুরু

জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপুফাইল ছবি

ঢাকার শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু হত্যা মামলায় বিদেশে পলাতক দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ২১ মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন আজ সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রফিক উদ্দিন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পিপি রফিক উদ্দিন বলেন, অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার শুরু হলো। অভিযোগপত্রভুক্ত ৩৩ আসামির মধ্যে ৬ জন পলাতক। কারাগারে আছেন ১৯ আসামি। জামিনে ৮ জন। অভিযোগ গঠনের শুনানিকালে আদালতে উপস্থিত আসামিরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন।

২০২২ সালের ২৪ মার্চ শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সে সময় ঘটনাস্থলে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান ওরফে প্রীতিও (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় জাহিদুলের স্ত্রী ফারহানা ইসলাম শাহজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

গত বছরের ৫ জুন এই মামলায় তালিকাভুক্ত দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

অভিযোগপত্রের তথ্য ও ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, মতিঝিলকেন্দ্রিক চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক আধিপত্য—এ দুই কারণে জাহিদুলকে হত্যা করা হয়। হত্যার পরিকল্পনায় বিদেশে পলাতক দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ ও জাফর আহমেদ ওরফে মানিকসহ ৩০ জনের নাম এসেছে। আর হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন তিনজন।

ডিবির তথ্যমতে, পরিকল্পনায় কারা ছিলেন, হত্যায় কয়জন অংশ নিয়েছিলেন, কার কী ভূমিকা ছিল—দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে তদন্ত করে সেসব তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, হত্যার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নে একেকজনের একেক ধরনের ভূমিকা ছিল। এই হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন ‘শুটার’ মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ, তাঁর বন্ধু মোল্লা শামীম ও পলাশ ওরফে কাল্লা পলাশ। অন্যরা সবাই হত্যার পরিকল্পনাকারী।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিবি ‘শুটার’ মাসুমকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁর জবানবন্দিতে সমন্বয়কারী সুমন শিকদার ওরফে মুসার নাম আসে। তাঁকে ওমান থেকে গ্রেপ্তার করে গত বছরের জুনে ঢাকায় আনা হয়। পরে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দিতে এই হত্যায় জড়িত বলে যাঁদের নাম আসে, তাঁদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।