আবাসনে অন্যতম প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড

রাজধানীর গুলশানে বাণিজ্যিক এলাকায় আমিন মোহাম্মদের নির্মাণাধীন ভবনের গ্রাফিকসছবি: এএমএফএলের সৌজন্যে

দেশের আবাসন খাতে তিন দশকের অনেক সাফল্যের গল্প আছে আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেডের (এএমএফএল)। পথচলার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির অভিজ্ঞতা, অর্জন ও স্বকীয়তার ধারাবাহিকতায় শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরুর পর প্রতিষ্ঠানটি আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় উচ্চ মান, নিরাপত্তা ও সময়মতো প্রকল্প হস্তান্তর করছে। এ কারণে দেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক কাঠামো ও কার্যক্রম বিস্তৃত হতে থাকায় গড়ে ওঠে আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ (এএমজি), যেখানে এএমএফএল ফ্ল্যাগশিপ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নীতিনিষ্ঠা, মান ও গ্রাহকসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়নে কাজ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। তিন দশকের এই যাত্রায় এ পর্যন্ত ১৫৭টি প্রকল্প হস্তান্তর করেছে এএমএফএলের মধ্যে ৩৩টি বাণিজ্যিক এবং ১২৪টি আবাসিক। এসব প্রকল্প রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় শহর পরিকল্পনা, নাগরিক সুবিধা এবং নিরাপদ আবাসন তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।

বর্তমানে এএমএফএলের চলমান কাজও বেশ বিস্তৃত। নির্মাণাধীন রয়েছে ২০ লাখ বর্গমিটার বাণিজ্যিক স্পেস, ২০ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ইউনিট এবং ৫০ হাজার বর্গমিটার হোটেল–রিসোর্ট। সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রায় ২৫ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের প্রকল্পও বাস্তবায়ন করছে প্রতিষ্ঠানটি। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আরও ৫০ লাখ বর্গমিটার বাণিজ্যিক এলাকা, ৭ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ইউনিট এবং নতুন হোটেল–রিসোর্ট উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি খাতে ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের নতুন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তুতিও চলছে।

প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্বে আছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রমজানুল হক নিহাদ। অস্ট্রেলিয়া থেকে ম্যানেজমেন্ট ও এইচআর ডেভেলপমেন্টে স্নাতক করে দেশে ফেরার পর ২০১৫ সালে তিনি এএমএফএলে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। অল্প বয়সেই তাঁর নেতৃত্বে সম্পন্ন হয় ৫৬টি প্রকল্প। ২০২০ সালের জুলাইয়ে গ্রুপের এমডি হওয়ার পর নতুন কৌশলগত উদ্যোগ নিয়ে এএমজিকে আরও বড় আকারে সম্প্রসারণ করেন তিনি। এ সময়েই গড়ে ওঠে আমিন মোহাম্মদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, যার লক্ষ্য সরকারি বড় অবকাঠামো প্রকল্পে অংশগ্রহণ করা। ইতিমধ্যে এলজিআরডি, এলজিইডি, পিডব্লিউডি, সিভিল এভিয়েশন, এমইএস ও বেপজার সঙ্গে কাজের জন্য আলোচনাও এগোচ্ছে।

এএমএফএলের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ তানভীরুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ জনবল এবং নিখুঁত ডেলিভারি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে তাঁরা আবাসন ও বাণিজ্যিক স্থাপনা উন্নয়নে নতুন মানদণ্ড তৈরি করতে চান। শুধু ভবন নির্মাণ নয়, দেশের দীর্ঘমেয়াদি নগর উন্নয়ন, অবকাঠামোর প্রসার এবং পরিকল্পিত নগরায়ণে আরও বড় ভূমিকা রাখাই তাঁদের লক্ষ্য।

দেশের আবাসন শিল্পে যেখানে আস্থা, সময়মতো কাজ সম্পন্ন এবং মানসম্মত নির্মাণ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, সেখানে তিন দশকের অভিজ্ঞতা নিয়ে এএমএফএল এখন একটি প্রতিষ্ঠিত ও নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড। ভবিষ্যতের পরিকল্পনাও তাদের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন চিন্তারই প্রতিফলন। নতুন প্রকল্প, বিস্তৃত বিনিয়োগ এবং সরকারি সংস্থার সঙ্গে অংশীদারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দেশের নগরায়ণ ও অবকাঠামো খাতে আরও বড় অবদান রাখবে—এমনটাই আশা করছে আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেড। এই একীভূত ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, উদ্ভাবন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে নতুন গতি যোগ করেছে।

এএমএফএলের মূল লক্ষ্য হলো নীতিনিষ্ঠা, মান এবং গ্রাহকসেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিক আবাসনের সমাধান নিশ্চিত করা। প্রতিষ্ঠানটি একটি বিশ্বমানের বহুজাতিক কোম্পানি হিসেবে গড়ে উঠতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই প্রতিষ্ঠান আগামী দিনে উদ্ভাবন ও উন্নত সেবাই হবে মূল চালিকা শক্তি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, আবাসন ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, সময়মতো প্রকল্প হস্তান্তর এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার কারণে এএমএফএল বর্তমানে আবাসন খাতের গ্রাহকদের কাছে দেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। দেশের নগরায়ণ ও উন্নয়ন–অবকাঠামোয় বড় অবদান রাখতে বিভিন্ন প্রকল্পে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এএমএফএল; যা দেশের আবাসন খাতে উদাহরণ হয়ে থাকবে।