নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে, বললেন আমন্ত্রিত পর্যবেক্ষকেরা

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকাছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থাসহ (ওআইসি) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বেশ কয়েকটি দেশের পর্যবেক্ষকেরা। আমন্ত্রিত এসব বিদেশি পর্যবেক্ষক বাংলাদেশের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের পরিবেশের প্রশংসা করেছেন।

রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় নির্বাচনের ভোট পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাঁরা এ মন্তব্য করেন। সরকারের আয়োজনে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখার কথা জানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাশিম কুহাইল বলেন, ভোট শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের পরিবেশও খুব ভালো ছিল। নাগরিকদের ভোটদান প্রক্রিয়াও খুব সহজ ছিল।

কানাডার পার্লামেন্ট সদস্য চন্দ্রকান্ত আর্য বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। ভোটে রেকর্ডসংখ্যক নারী ভোটার উপস্থিত ছিলেন। আমরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অভিনন্দন জানাই।’

এক প্রশ্নের জবাবে চন্দ্রকান্ত আর্য বলেন, ‘যারা ভোট বর্জন করেছে, সেটা তাদের বিষয়, এটা আমাদের বিষয় না। কানাডায়ও ভোট ৪৩ শতাংশ পড়েছিল, সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। জনগণ ভোট দিতে পারছে কি না, এটাই দেখার বিষয়। ভোটার কত শতাংশ এল তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যারা এসেছে, তারা ঠিকমতো ভোট দিয়েছে নির্বিঘ্নে। তাই এ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণ নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ফিলিস্তিনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাশিম কুহাইল
ছবি: প্রথম আলো

নাইজেরিয়ার সিনেটর প্যাট্রিক সি বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় লোকজনকে উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিতে দেখেছেন। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকা বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। তবে প্রধান বিরোধী দল এলে নির্বাচন আরও অংশগ্রহণমূলক হতো। স্বচ্ছ ভোটার তালিকা ও ভোটপদ্ধতির প্রশংসা করেন তিনি।

পাওলো কাসাকা বলেন, যারা নির্বাচন বর্জন করেছে, তদের দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসা উচিত।

পর্তুগালের নাগরিক কাসাকা বলেন, ‘আমি মর্মাহত যে সহিংসতা এখনো ঘটছে। দ্বিতীয় যে কারণে আমি দুঃখিত, সেটি হচ্ছে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া। এখানে ঐকমত্য হলে পূর্ণ অংশগ্রহণ হতো।’

বিরোধী দলের সমালোচনা করে কাসাকা আরও বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হলে সরকারকে চলে যেতে হবে। এর মানে কী? এটা মৌলিকভাবে একটি অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।

সহিংসতার চক্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে এবং এ জন্য আলোচনার টেবিলে বসতে হবে বলে মনে করেন পাওলো কাসাকা। তিনি বলেন, যারা নির্বাচন বর্জন করেছে, তাদের যত দ্রুত সম্ভব রাজি হতে হবে সবার সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য। যাতে কখনো বর্জন না হয় সেটি নিশ্চিত করার জন্য।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যান্য অনেক দেশের থেকে এগিয়ে রয়েছে এবং এটি একটি ভালো নির্বাচনী প্রক্রিয়া বলে মন্তব্য করেন পাওলো কাসাকা।