খামারবাড়িতে এক ঘণ্টা পর এল দুধ ডিম মাংসের গাড়ি, রোদে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ ক্রেতাদের

রাজধানীর খামারবাড়িতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুধ, ডিম, মাংস কম দামে কিনতে ক্রেতাদের লাইন। বেলা ১১টার দিকে তোলাছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

পবিত্র রমজান উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির তৃতীয় দিন আজ মঙ্গলবার। রাজধানীর খামারবাড়িতে সকাল ১০টার দিকে দুধ, ডিম ও মাছ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের গাড়ি আসার কথা ছিল। বেলা ১১টার পর ভ্রাম্যমাণ ফ্রিজিং ভ্যান আসে।

এতে এক ঘণ্টা ধরে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। ৫০ জনের বেশি নারী-পুরুষ দুধ, ডিম, মাংসের অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগই বয়স্ক। কড়া রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁরা। কেউ কেউ পণ্য না কিনেই চলে যান।

খামারবাড়িতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পণ্য কিনছে একজন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তোলা
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বেসরকারি চাকরিজীবী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সকাল ৯টায় এসেছি। ভেবেছিলাম, সকাল ৯টা থেকেই মাংস, দুধ, ডিম বিক্রি করা হবে। কিন্তু ১১টা বেজে গেল এখনো গাড়ি আসেনি। এভাবে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে গেলে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বেন।’

মাংস, দুধ, ডিম বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রেয়াজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কিছু ড্রেসড ব্রয়লারের ঘাটতি পড়ে গেছে। বিশেষ অর্ডার দিয়ে আনা হচ্ছে। সে কারণে একটু দেরি হচ্ছে। তবে আসবে।’

রমজান উপলক্ষে সুলভ মূল্যে মাছ বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন মৎস্য অধিদপ্তর। মৎস্য অধিদপ্তরের গাড়ি খামারবাড়িতে মাছ বিক্রি করছে সকাল ১০টা থেকে। রুই ২৪০, পাঙাশ ১৩০, তেলাপিয়া ১৩০, পাবদা ৩৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সেখানে দায়িত্ব পালনকারী মৎস্য অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, ‘প্রতি প্রজাতির মাছ সর্বোচ্চ ২ কেজি করে কিনতে পারবেন ক্রেতারা। সকাল থেকে ভালো বিক্রি হচ্ছে। শহরে মোট আটটি ভ্যান যাবে। প্রতিটি ভ্যানে ৩০০ কেজি করে মাছ থাকার কথা। আমরা মোট ৩১১ কেজি মাছ নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে তেলাপিয়া ১২৩ কেজি, রুই ৫০ কেজি এবং পাবদা ১৫ কেজি আনা হয়েছে।

খামারবাড়ি এলাকায় রাজধানীর উত্তরা থেকে চিকিৎসার কাজে এসেছিলেন রোখসানা আক্তার। তিনি এক কেজি পাবদা ও এক কেজি তেলাপিয়া ৪৬০ টাকায় কেনেন। রোখসানা আক্তার বলেন, ‘চিকিৎসার কাজে এসেছিলাম। মাছ পেয়ে নিয়ে গেলাম। সরকারের এই উদ্যোগ ভালো।’

রাজধানীর মোট ৩০টি স্থানে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র ২৫টি এবং স্থায়ী বাজার ৫টি। ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রগুলো হলো নতুন বাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আবদুল গনি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা), বছিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (শিকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) ও কাকরাইল।

আর স্থায়ী বাজার হলো মিরপুর শাহ আলী বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর ও কাজী আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।