ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী তানভীর ইসলাম জয়ের লাশ মালয়েশিয়ায় তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে উদ্ধার

খোন্দকার তানভীর ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় পালিয়ে থাকা ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী খোন্দকার তানভীর ইসলাম ওরফে জয় মারা গেছেন। গত শুক্রবার কুয়ালালামপুরে একটি তালাবদ্ধ অ্যাপার্টমেন্টের একটি কক্ষ থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। গতকাল সোমবার দুপুরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। যদিও বাংলাদেশ পুলিশ বলছে, এ বিষয়ে তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তানভীর এত দিন ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে ‘তারেক রানা’ পরিচয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন। কয়েক বছর আগে তানভীর কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হতো। গত শুক্রবার সকালে তাঁর গৃহকর্মী অ্যাপার্টমেন্টে এসে কলিং বেল বাজানোর পরও সাড়া না পেয়ে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের জানান। নিরাপত্তাকর্মীরাও ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে স্থানীয় পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে জয়ের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টারপোলের শাখা কার্যালয় ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) আলী হায়দার চৌধুরী আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, মালয়েশিয়ায় তানভীরের মৃত্যুর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নব্বইয়ের দশকের ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ লিয়াকত-হান্নানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অপরাধজগতে আলোচিত হন তানভীর। কলাবাগানের ধনাঢ্য পরিবারের তাঁর জন্ম। তিনি ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদের সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। পুলিশের কাছে ‘সেভেন স্টার’ নামে পরিচিতি পায় তাঁদের গ্রুপটি। তানভীরের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যাকাণ্ড, দুটি হত্যাচেষ্টা, মারাত্মক জখম এবং চাঁদার জন্য শারীরিক ক্ষতির হুমকি দেওয়ার অনেকগুলো অভিযোগ ছিল।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে ২০০০ সালে গ্রেপ্তার হন তানভীর। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি ভারতে চলে যান। সেখান থেকে ‘তারেক রানা’ নামে পাসপোর্ট করে ২০০১ সালে মালয়েশিয়া চলে যান। ভারতের পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি কানাডা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও থাইল্যান্ডে বসবাস করে আসছিলেন। একপর্যায়ে কানাডায় ‘এসজে ৭১’ নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে বসেন তানভীর। সেখানে রানা অ্যাজাক্স নামে পরিচয় দিতে শুরু করেন। ২০১৫ সালে কানাডা পুলিশ তাঁর ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছিল।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে বাংলাদেশের অনুরোধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা (ইন্টারপোল) তানভীরের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারি করে।