ডেসটিনির এমডি করলে ক্ষতিগ্রস্তদের পরের মাস থেকে টাকা দেবেন, বললেন রফিকুল আমীন

রফিকুল আমীন
ছবি: প্রথম আলো

বহু স্তর বিপণন (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিষদে যাঁরা আছেন, তাঁদেরই ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে মনে করেন ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন। আর তাঁকে যদি টাকা দিতে হয়, তাহলে তাঁকে পরিচালনা পরিষদে নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

রফিকুল আমীন বলেন, ‘ডেসটিনির কাছে যে বিল পাবে, যে টাকা পাবে, বর্তমান ম্যানেজমেন্টকেই দিতে হবে, রফিকুল আমীনকে যদি ফেরত দিতে হয়, রফিকুল আমীনকে আগের বোর্ডে নিয়ে আসতে হবে। এমডির পজিশনে বসাতে হবে। ওয়াদা করতেছি আমাকে এমডি পজিশনে দেওয়া এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার এক মাস পরে থেকে আমি টাকা দেওয়া শুরু করব।’ তবে কীভাবে টাকা দেবেন, তা ব্যাখ্যা করেননি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল শেরাটনে রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রফিকুল এসব কথা বলেন।

ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ-পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুলসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়। রাজধানীর কলাবাগান থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এসব মামলায় দণ্ড ভোগ শেষে গত ১৫ জানুয়ারি কারাগার থেকে ছাড়া পান রফিকুল আমীন।

রফিকুল আমীন আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে যখন সাজা শোনানো হয়, আমি তার আগে বলেছি, মাননীয় আদালত আমাকে যে সাজাই দেন, আমাকে পরিচালনা পরিষদে থাকার ব্যবস্থা করেন। আমাকে হুকুম দিয়ে দেন, আমি যাতে টাকাটা ফেরত দিই। আদালত আমাকে হুকুম দেননি, কারণ জানে আমাকে হুকুম দিলে আমাকে পরিচালনা পরিষদে রাখতে হবে। আমাকে পরিচালনা পরিষদ থেকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে ১৭ জন আসছে। সেখানে চারজন আছে বিগত সরকারের দেওয়া।’

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর ডেসটিনি ২০০০-এর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এখন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া।

কারাগার থেকে বের হওয়ার পরে বর্তমান ব্যবস্থাপনা বোর্ড সাবেক এমডি রফিকুল আমীনকে ডেসটিনির পরিচালনা বোর্ডে ঢুকতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন নিজেই। তিনি বলেন, তাঁকে ষড়যন্ত্র করে বোর্ডে নেওয়া হচ্ছে না। বিদেশে পলাতক তিনজন পরিচালক আছেন, তাঁরাই এই ষড়যন্ত্র করছেন। তাঁরা সব টাকাপয়সা নিয়ে দেশ ছেড়েছেন।

২০০১ সালের ৫ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে কোম্পানিটি প্রথম এক যুগ সাফল্যের সঙ্গে ব্যবসা করে। বন্ধ থাকার কারণে পরের এক যুগ ব্যবসা করতে পারেনি। দেশজুড়ে তাদের ৪৫ লাখ গ্রাহক ছিল।