পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরল জেএসএস
বিদায়ী ২০২২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে ২৩৫টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরকারী আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জেএসএস। দলটি গত রোববার গণমাধ্যমে এ প্রতিবেদন পাঠায়।
গত ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর পূর্ণ হয়। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত৵ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে পাহাড়ে দুই দশকের সশস্ত্র লড়াইয়ের অবসান হয়। ৭২টি ধারা সংবলিত পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার ও জেএসএসের ভিন্ন অবস্থান রয়েছে। সরকারের তরফ থেকে চুক্তির অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়নে দাবি করা হলেও জেএসএস বলে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্তই এখনো পূর্ণ হয়নি।
জেএসএস বিদায়ী বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের পরিবর্তে বর্তমান সরকার পূর্ববর্তী শাসকদের মতো অবস্থান নিয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরকারী এই সরকার একনাগাড়ে ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকেও চুক্তি বাস্তবায়ন না করে উল্টো চুক্তিবিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ–পরিপন্থী একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও জুম্ম জনগণের জাতীয় অস্তিত্ব অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় দাঁড়িয়েছে।
জেএসএস বলেছে, ২০২২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে ২৩৫টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১ হাজার ৯৩৫ জন পাহাড়ি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে।
ভূমিদস্যুদের মাধ্যমে সংঘটিত ৪০টি হামলার ঘটনায় ৪৪৮ জন পাহাড়ি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে।
সংযোগ সড়ক নির্মাণের ফলে বাঘাইছড়িতে ১৮৮টি পরিবারসহ তিন পার্বত্য জেলায় জুম্ম গ্রামবাসীদের অন্তত ৫০০ পরিবারের ঘরবাড়ি, বসতভিটা ও বাগান ধ্বংস হয়েছে। এসব পরিবার চিরায়ত জায়গা-জমি থেকে উচ্ছেদের মুখে পড়েছে এবং এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ব্যাপকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
জেএসএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১২ থেকে ১৭ নভেম্বর রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি সফরের সময় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বিতর্কিত ১০টি নির্দেশনার ফলে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কূটনীতিক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়নি।
আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আছেন জেএসএসের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।