বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশের বেশি শিশুকে টাইফয়েডের টিকার আওতায় আনা হয়েছে। ‘টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন ২০২৫’-এর মাধ্যমে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশুকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।
বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, এই অসামান্য অর্জন প্রমাণ করেছে যে শিশুদের প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ও কষ্ট থেকে সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সন্তান গুরুতর অসুস্থ হলে পরিবারগুলো যে অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে, তা থেকে পরিবারগুলোকে সুরক্ষা দিতেও সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন টাইফয়েড প্রতিরোধে বিশ্বে নেতৃস্থানীয় দেশগুলোর কাতারে চলে এসেছে। জীবন রক্ষাকারী টিসিভি প্রচার কার্যক্রম চালু করা দেশগুলোর মধ্যে অষ্টম দেশ এখন বাংলাদেশ।
রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) করা সর্বশেষ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভেতে (এমআইসিএস) দেখা গেছে, বাংলাদেশে মাত্র ৩৯ শতাংশ মানুষের নিরাপদ পানি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, পানির সব ধরনের উৎসের প্রায় অর্ধেকে (৪৭ শতাংশ) ই কোলাই ব্যাকটেরিয়ার দূষণ রয়েছে। প্রতি ১০টির মধ্যে আটটি পরিবারের ব্যবহার করা পানির নমুনায় (প্রায় ৮৫ শতাংশ) এই ব্যাকটেরিয়ার দূষণ রয়েছে। ফলে লাখ লাখ শিশুর টাইফয়েডের মতো অসুখে আক্রান্ত হওয়া খুবই সহজ। শিশুরা প্রতিদিন এই ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে। সাধারণ এক গ্লাস পানিই শিশুদের জন্য ভয়ানক বিপদ ডেকে আনতে পারে। এ কারণে ইউনিসেফ টাইফয়েড টিকা কার্যক্রম শুরুর জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করেছে।
বিবৃতিতে ইউনিসেফ প্রতিনিধি আরও বলেন, প্রতিটি পরিবারের জন্য নিরাপদ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার আগপর্যন্ত শিশুদের গুরুতর অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা দেওয়া ও তাদের ভবিষ্যৎ সুস্থতা নিশ্চিত করা ও বাবা-মাকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখার জন্য শক্তিশালী ব্যবস্থাগুলোর একটি টিসিভি। বাংলাদেশের জনগণ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) নেতৃত্ব ও উদ্যোগ এই কার্যক্রমকে সফল করেছে। টিকার বিরুদ্ধে যখন গুজব ও ভুল তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন শিশুদের পরিবারগুলোকে নির্ভুল তথ্য দিয়ে আস্থা জুগিয়েছে গণমাধ্যম।