অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায়

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সামুদ্রিক বিষয়ক ইউনিট) রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স থেকে নেওয়া

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং দ্বিপক্ষীয় সফরে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশে এসেছেন।

বেলা সাড়ে ১১টার পর ঢাকায় আসেন পেনি। তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সামুদ্রিক বিষয়ক ইউনিট) রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।

দুই দিনের এ সফরে পেনি দুই দেশের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা করবেন।

ঢাকা ও ক্যানবেরার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পেনির সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ার পাশাপাশি শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, সুনীল অর্থনীতি, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, অভিবাসন ইত্যাদি নানা বিষয় উঠে আসতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি তাঁর সফরের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনে পেনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে-বুঝতে কক্সবাজার যাবেন।

দীর্ঘ বিরতির পর অস্ট্রেলিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ দ্বিপক্ষীয় সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার নিরিখে সফরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তাঁদের প্রত্যাশা।

দুই দেশের মধ্যে গত এক দশকে বাণিজ্য বাড়ার প্রসঙ্গ টেনে একজন কূটনীতিক জানান, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দুই দেশেরই বেড়েছে। ছয় বছর আগে দুই দেশের বাণিজ্য ছিল ১৪০ কোটি ডলার, যা এখন প্রায় ৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পরও অস্ট্রেলিয়া থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহতভাবে পাবে। ফলে আগামী কয়েক বছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সম্ভাবনা আছে।

অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রাথমিক পণ্য হিসেবে বাংলাদেশ কৃষিজাত পণ্য, বিভিন্ন ধরনের ধাতু ও খনিজ পদার্থ, তুলা, উলসহ নানা পণ্য আমদানি করে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার তুলা ও উল বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে ব্যবহার করা হয়। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশ লোহা, কপার ও জিঙ্ক মাত্র ছয় কোটি ডলারের আমদানি করত। চার বছরের মধ্যে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ২০ কোটি ডলারে।

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা, বাংলাদেশের আর্থিক অগ্রযাত্রাসহ গত এক দশকের বড় সময়জুড়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতির জেরে এই অঞ্চলকে ঘিরে অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশকে নিয়েও দেশটির মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে।