ক্ষমতার দাপটের পরিণাম ভোগ করছে বিগত সরকার: বদিউল আলম মজুমদার

নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। বৃহস্পতিবার, জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষমতার দাপট দেখায় সরকার। সরকারের সঙ্গে যেসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান থাকে, তারাও ক্ষমতার দাপট দেখায়। বিগত সরকারের ক্ষমতার দাপটে দেশে বিশৃঙ্খলার বিষয়ে সবাই জানেন। সেই দাপটের পরিণামই তারা ভোগ করছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বদিউল আলম মজুমদার। নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ক্ষমতার দাপট কমিয়ে সুষ্ঠু গণতন্ত্র ধরে রাখতে এমন একটি রাজনৈতিক দল দরকার, যাদের সব কার্যক্রমে স্বচ্ছতা থাকবে। নাগরিক ঐক্য তেমনি একটি দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন

দেশে মব সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে সাবেক দুজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে একজন যে হেনস্তার শিকার হয়েছেন, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি এটার নিন্দা জানাই। কেউ অপরাধী হলে অবশ্যই তিনি উপযুক্ত সাজা পাবেন।’

রাজনৈতিক দলের মধ্যে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হয় উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নাগরিক ঐক্য এমন একটি দল হয়ে উঠবে, যারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করবে। ফ্যাসিবাদ পতনের পর নতুন বাংলাদেশের লড়াই আবেগের নয়, বরং বুদ্ধিবৃত্তিক হতে হবে।

‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারকাজকে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে চাই। এখন পর্যন্ত সংস্কার প্রশ্নে যতটা এগিয়েছি, এটা একটা বিরাট অর্জন। রাজনীতিতে নাগরিক ঐক্য একটি কল্যাণমুখী দল গড়ার চেষ্টা করছে’, বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে শিক্ষার্থী থেকে কৃষক—সবার জীবন বৈষম্যে পতিত হয়েছিল। নারীদের হয়রানি ও নির্যাতন ভয়াবহ ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসেও অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমের সমালোচনা করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘কমিশন তথাকথিত ঐকমত্যের নামে মুক্তিযুদ্ধের ভাবধারা পরিবর্তন করতে চায়। সংস্কার করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি ঠিক রেখে সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।’

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গত ১০ মাসে মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার।