জগন্নাথে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আরেক শিক্ষক বরখাস্ত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাণিক মুনসীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় যৌন নিপীড়নের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তার জবাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সভার সদস্যরা।

সভা শেষে সিন্ডিকেট সভার সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আইনুল ইসলাম এসব তথ্য গণমাধ্যমকে জানান। রেজিস্ট্রার বলেন, ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তদন্ত করে কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক মাণিক মুনসীকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাদেকা হালিমের সভাপতিত্বে সভার অন্য সদস্যদের মতামতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গণিত বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রথমে ওই শিক্ষকের কাছে কাউন্সেলিং ও বিভিন্ন পরামর্শের জন্য আসতেন। এই সুযোগে তিনি ছাত্রীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীকে বিয়ের কথা বলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে গণিত বিভাগের একাডেমিক সভায় সর্বসম্মতভাবে অভিযুক্ত শিক্ষককে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বিভাগের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্যকে লিখিতভাবে জানানো হয়।

উপাচার্যকে বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ওই শিক্ষকের নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ অবস্থায় এক ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন। বিষয়টি বিভাগের অন্য এক শিক্ষকের নজরে আসে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই ছাত্রী বিয়ে করতে বললে অভিযুক্ত শিক্ষক আপত্তি জানান। পরে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। ওই শিক্ষক তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে বলেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে জানিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক মাণিক মুনসীকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হয় ও পরে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি কোনো সাড়া দেননি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সম্প্রতি আরেক ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং বিভাগের চেয়ারম্যানকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।