সাজানো বিয়ের মাধ্যমে প্রতারণার মামলায় মুঠোফোন কোম্পানির সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

আদালত
প্রতীকী ছবি

সাজানো বিয়ের মাধ্যমে এক নারীর সঙ্গে আড়াই বছর বসবাস করে সম্পর্ক তৈরির অভিযোগের মামলায় একটি মুঠোফোন কোম্পানির সাবেক কর্মকর্তা এ এস এম আশরাফের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ৪ জুলাই এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন রয়েছে।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর সম্প্রতি এই আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী সিদ্দিক আজাদ প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতারণামূলকভাবে মিথ্যা বিয়ের মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরির অভিযোগে ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর এ এস এম আশরাফের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে নালিশি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর এ এস এম আশরাফের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত বছরের ১৬ অক্টোবর পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ এস এম আশরাফের নামে সমন জারির আদেশ দেন আদালত। পরে ১৩ নভেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি। মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আসামিপক্ষ থেকে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। আদালত ওই আবেদন নাকচ করেন।

ভুক্তভোগী নারী মামলায় অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর করার সময় ভুক্তভোগী নারী ও অভিযুক্ত ব্যক্তির বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে ওই নারীকে কৌশলে বিয়েতে রাজি করান ওই ব্যক্তি। তিনি ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল উত্তরার রূপায়ণ সিটি এলাকায় নিয়ে ওই নারীকে সাজানো বিয়ে করেন। বিয়ের সব আয়োজন থাকলেও পুরোটাই ছিল নাটক। ফলে কথিত কাবিনের বিশ্বাসে আড়াই বছর সংসার করেন ভুক্তভোগী নারী। সংসার করার সাত মাসের মাথায় ওই নারী জানতে পারেন, তাঁর কথিত স্বামী আগে আরেকটি বিয়ে করেছেন। সেই ঘরে সন্তান রয়েছে।

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের বিয়ে, স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন করে ভুক্তভোগী বাদীর সাথে বিয়ের বিশ্বাস জন্মিয়ে স্বামী–স্ত্রী হিসেবে প্রতারণামূলকভাবে আড়াই বছর ধরে বসবাস করেন বিবাদী। বিবাদী আইনসম্মতভাবে বিয়ে হয়নি জেনেও স্বামীর পরিচয়ে বাদীর সঙ্গে স্বামী–স্ত্রীর মতো করে সম্পর্ক চালিয়ে গেছেন বলে প্রাথমিক সত্য বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়েছে, যা দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারার অপরাধ।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ওই নারীর করা আরেক মামলায় এ এস এম আশরাফসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

তবে আসামি এ এস এম আশরাফের আইনজীবী তানজিব আল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মক্কেলকে হয়রানি করার জন্য মামলা করা হয়েছে। তাঁর মক্কেলের দায়ের করা প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলায় পিবিআই ওই নারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। মামলাটি অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।