রন, রিক ও পারভীন হক সিকদারের ব্যাংককে ৭টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ
শিল্পগোষ্ঠী সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার, তাঁর ভাই রিক হক সিকদার এবং বোন পারভীন হক সিকদারের নামে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে থাকা সাতটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষ থেকে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডে সিকদার গ্রুপের যে সাতটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো কই রেস্টুরেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, সিকদার গ্রুপ লিমিটেড, সিকদার হোল্ডিং লিমিটেড, আর অ্যান্ড আর রেস্টুরেন্ট গ্রুপ লিমিটেড, জিরানা কোম্পানি লিমিটেড, জে আর আর্কিটেক্ট লিমিটেড, সিকদার অ্যান্ড গারিট ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড।
দুদক ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, তিন ভাই–বোন রন হক সিকদার, রিক হক সিকদার ও পারভীন হক সিকদারের নামে থাইল্যান্ডে থাকা সাতটি কোম্পানির শেয়ারের তথ্য তুলে ধরে এসব অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান। শুনানি নিয়ে আদালত সিকদার গ্রুপের এসব কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রন হক সিকদার, তাঁর মা মনোয়ারা সিকদারসহ তাঁদের পরিবারের কয়েকজনের নামে থাকা ২০৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। সিকদার পরিবারের মালিকানাধীন ২০৩টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
তারও আগে গত ১১ মার্চ রন হক সিকদার, তাঁর মা মনোয়ারা সিকদারসহ তাঁদের পরিবারের ১৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বাকি ১২ জন হলেন রন হক সিকদারের ভাই মমতাজুল হক সিকদার, নাসিম সিকদার, দিপু হক সিকদার, রিক হক সিকদার, বোন পারভীন হক সিকদার ও লিসা ফাতেমা হক সিকদার, পারভীনের স্বামী সালাউদ্দিন খান, নাসিম সিকদারের মেয়ে মনিকা খান সিকদার, পারভীনের মেয়ে জেফরী খান সিকদার ও মেন্ডি খান সিকদার, রন হক সিকদারের ছেলে শন হক সিকদার এবং রিক হক সিকদারের ছেলে জন হক সিকদার।
গত ৯ মার্চ রন হক সিকদার, মনোয়ারা সিকদারসহ তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ৪২টি বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রন হক সিকদার, মনোয়ারা সিকদারসহ তাঁদের পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। তখন মোট ১৫টি ভবন ও ফ্লোর জব্দের আদেশ দেওয়া হয়।
বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ারা সিকদার। একই ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদার। তাঁরা প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকটির বিপুল অর্থ লুট ও বিদেশে পাচার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়েছে, জনগণের আমানতের অর্থ আত্মসাৎ করে তাঁরা নিজেদের, পরিবারের সদস্যদের ও নিকটাত্মীয়দের নামে-বেনামে প্রচুর সম্পদ গড়েছেন।