নারী ও শিশু সহায়তা প্রকল্প এখন নিজেই ‘ভুক্তভোগী’ 

করোনার ধাক্কায় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম প্রকল্পে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এতে অর্থসংকটে অনেক সেবা বন্ধ। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা নিচ্ছেন দুই নারী ও তিন কিশোরী। দুই নারী স্বামীর নির্যাতনে আহত হয়ে ওসিসিতে ভর্তি হয়েছেন। আর ধর্ষণের শিকার হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছে তিন কিশোরী। এদের মধ্যে এক কিশোরী প্রতিবেশীর মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্য দুই কিশোরী সদ্যপরিচিত ছেলেবন্ধুর সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়।

ঢাকা মেডিকেলের ওসিসিতে আটটি শয্যা রয়েছে। ১৪ জানুয়ারি সেখানে গিয়ে এই পাঁচজনকে পাওয়া যায়। শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নয়, দেশের আরও ১৩টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের বেশ কিছু সরকারি হাসপাতালে ভুক্তভোগী নারী–শিশু ওসিসিতে চিকিৎসা নেয়। 

‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম’ প্রকল্পের আওতায় দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে এসব ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) ও ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি–সেল) রয়েছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রকল্পটি পরিচালিত হয়। ওসিসি ও ওসিসি–সেলে শারীরিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন এবং দগ্ধ—এ তিন ধরনের সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুদের চিকিৎসা, ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ওসিসি সেলের মাধ্যমে পুলিশ ও আইনি সহায়তা, কাউন্সেলিং ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। 

দুই বছর আগে হলেও ওই পাঁচ নারী–কিশোরী ওসিসি ছেড়ে যাওয়ার সময় বয়স অনুযায়ী পুনর্বাসনের সুযোগ পেতেন। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের কেউ কেউ পেতেন সেলাই মেশিন আর শিশু-কিশোরীরা পোশাক ও শিক্ষা উপকরণ। তাদের মামলার অগ্রগতি জানতে ও পরামর্শ দিতে মাসে একবার যাতায়াত ভাড়া দিয়ে ডেকে আনা হতো। এই পাঁচজন এখন আর এ ধরনের সুবিধা পাবেন না। করোনার ব্যয় সংকোচনের ধাক্কা লেগেছে এখানেও। এমন নারী–শিশুদের সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ঢাকা মেডিকেলের ওসিসিতে কোভিডের পর পুনর্বাসন ও ফলোআপ সেবা বন্ধ রয়েছে। সারা দেশে ওসিসিতে (সেল ও সেন্টার) চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে পুনর্বাসন সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির সমন্বয়কারী আফরোজা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, পুনর্বাসন ও ফলোআপ ছাড়া এখান থেকে বাকি সব সেবা পাচ্ছে ভুক্তভোগীরা।

নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে সরকার এত দিন ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম’ প্রকল্পটিকে ‘ফ্ল্যাগশিপ’ (অতি গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে উল্লেখ করত। প্রকল্পটির এখন চতুর্থ পর্ব চলছে। চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ২২ বছরের পুরোনো প্রকল্পটিকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে আনা হয়। একই সঙ্গে কমানো হয়েছে ২৫ শতাংশ বাজেট। এতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুরো প্রকল্পে। জনবলের বেতন বকেয়া পড়েছে, জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের ব্যবস্থা না নেওয়ায় কয়েক শ কর্মকর্তা–কর্মচারী চাকরি হারানোর আশঙ্কায় আছেন। ওসিসিতে সহিংসতার শিকার নারী–কিশোরের সহায়তার হার বাড়লেও প্রতিবছর বাজেট কমেছে। 

আরও পড়ুন

প্রকল্পটি যেভাবে চলে

প্রকল্পের আওতায় রয়েছে—১৪টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওসিসি, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৭টি ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেল, ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি, ৮টি বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি, ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, ৮টি আঞ্চলিক ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার ১০৯, মোবাইল অ্যাপ ‘জয়’ (নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হতে যাচ্ছে মনে করলে এ অ্যাপে ক্লিক করলে ১০৯ নম্বরে এবং অ্যাপসে দেওয়া পরিবার ও বন্ধুদের তিনটি নম্বরে জিপিএস লোকেশনসহ মেসেজ চলে যাবে), রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম এবং নির্যাতন প্রতিরোধে জনসচেতনতা কার্যক্রম।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন সহায়তা পেতে সমন্বয়ের মতো কাজও করে সেলগুলো। যেমন ২০২১ সালে সাতক্ষীরার এক কিশোরী ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সেই সন্তান অবশ্য বাঁচেনি। ওই কিশোরী মামলা করার পর তাকে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সহায়তা এনে দিয়েছিল স্থানীয় সেল।

ওই কিশোরী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে একটি মুদিদোকান করে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ধর্ষক তার প্রতিবেশী। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি ঢাকায় চলে গেছেন। 

‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ থেকে অবনমন

২০০০ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের সরকারি সংস্থা ড্যানিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (ডানিডা) যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছিল। পাইলট প্রকল্পে ডানিডা ৮৯ শতাংশ, প্রথম পর্বে ৯০ শতাংশ, দ্বিতীয় পর্বে ৮৭ শতাংশ, তৃতীয় পর্বে ৫১ শতাংশ এবং চতুর্থ পর্বে ৪০ শতাংশ অর্থসহায়তা দিয়েছে। গত বছর জুনের পর ডানিডা প্রকল্প থেকে সরে যায়। তারা চলে যাওয়ায় ব্যয় কমিয়ে আনে সরকার। প্রকল্পের চতুর্থ পর্বের মেয়াদ ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ছিল। সংশোধন করে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর করা হয়। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) অনুসারে, চতুর্থ পর্বে মোট ১৩১ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

চলতি অর্থবছরে অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১৭টি প্রকল্পের মধ্যে তথ্য আপা ও জয়িতা ‘এ’ ক্যাটাগরি এবং বাকিগুলোকে ‘বি’ ক্যাটাগরি করা হয়। মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত প্রকল্প ৫ বছরের বেশি রাখা হয় না। এই প্রকল্প ২২ বছর ধরে চলছে। সরকার মনে করছে, নারী নির্যাতন আগের তুলনায় কমেছে। ফলে এত বড় প্রকল্প রাখার দরকার নেই। আর মন্ত্রণালয়ের এমন কিছু কর্মসূচি আছে, যার মাধ্যমে দরিদ্র নারীদের পুনর্বাসনে সেলাই মেশিন ও নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোকে অর্থ মন্ত্রণালয় কম গুরুত্ব দেয়। আবার প্রকল্পগুলো টিকিয়ে রাখা বা বাজেট না কমানোর ক্ষেত্রে দেনদরবারে মন্ত্রণালয়ের দুর্বলতা রয়েছে। 

আরও পড়ুন

সেবার চাহিদা বাড়লেও বাজেট কমেছে

প্রকল্পের তথ্য অনুসারে, ওসিসিতে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। সেবা নেওয়ার হার বাড়লেও বাজেট কমেছে। প্রকল্পের সেবা নেওয়ার তথ্যগুলো ভিন্ন ভিন্ন সাল থেকে পাওয়া গেছে। দেশের ১৪টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ২০০০ সাল থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি নারী–শিশু সহায়তা পেয়েছে। ৬৭টি ওসিসি (সেলে) ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সেবা পেয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার। ২০০৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ডিএনএ স্ক্রিনিং হয়েছে ৬ হাজারের বেশি। ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৮টি আঞ্চলিক ট্রমা কাউন্সিলে সেবা পেয়েছে সাড়ে ১৮ হাজারের বেশি। ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০৯–এ কল এসেছে ৫৮ লাখ ৪০ হাজারের বেশি। 

তবে প্রকল্পে ২০১৭ সালের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বাজেট কমেছে ৬৩ শতাংশের বেশি। ২০১৭ সালে ৬৭টি ওসিসিতে (সেল) সাড়ে ৮ হাজার নারী–শিশু সেবা নিয়েছিল। ২০২২ সালে সেবা নিয়েছে প্রায় ১৭ হাজার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ কমে ২১ কোটি টাকা হয়। পরের দুটি অর্থবছরে বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানো হয়। করোনার ধাক্কায় অর্থনৈতিক সংকটের কথা বলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচন নীতিতে চলে যায় সরকার। বাজেট নেমে যায় অর্ধেকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৫০ লাখ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরও কমে বাজেট ১১ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।

কয়েকজন ভুক্তভোগী ও প্রকল্পের কর্মীরা বলছেন, করোনার কারণে সরকারের বড় বড় প্রকল্পে অর্থ কাটছাঁট হয় না। অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও হাওরে উড়ালসড়ক নির্মাণে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কেবল দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য নেওয়া ছোট প্রকল্পে কাটছাঁট করা হয়।

চাকরি হারানোর শঙ্কা

এই প্রকল্পে বর্তমানে কাজ করছেন ২৬২ কর্মকর্তা–কর্মচারী। ২০১৯ সালে এই প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আবেদন করেন। মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ২৬২ পদ সৃজনের প্রস্তাব পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ মন্ত্রণালয় নতুন কিছু পদসহ ৫১০ পদ সৃজনের পুনঃপ্রস্তাব পাঠায়। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত বছরের ৬ জুন ২৩ পদের অনুমোদন দিয়ে সরকারি আদেশ (জিও) জারি করে। এত কম জনবল দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না জানিয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গত বছরের ১৫ নভেম্বর ৩৯৩ জনবলের আরেকটি প্রস্তাব তৈরি করে। এর মধ্যে সরাসরি ২৫২টি এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১৬১টি জনবলের প্রস্তাব করে। নতুন প্রস্তাব নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ অবস্থায় চাকরির অনিশ্চয়তা নিয়ে প্রকল্পের একাধিক পদের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা প্রথম আলোর কাছে হতাশা প্রকাশ করেন। একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘২০ বছর ধরে চাকরি করি। বয়স চল্লিশের কোঠায়। এখন চাকরি হারালে কোথায় চাকরি পাব? কীভাবে আমার সংসার চলবে? এলাকার লোকজন জানে সরকারি চাকরি করি। চাকরি হারালে আর মুখ দেখাতে পারব না।’

আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘ছয় মাসের বেতন বকেয়া ছিল। তিন মাসেরটা পেয়েছি। বাকিটা এখনো পাইনি। প্রকল্পটি চতুর্থ পর্যায়ে স্থানান্তরের সময় ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সেই বেতন এখনো পাইনি। এর মধ্যে প্রকল্প রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হলে বেশির ভাগেরই চাকরি যাবে। চাকরি নিয়ে এই অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রচণ্ড হতাশা কাজ করছে।’

প্রকল্পের কর্মকর্তারা প্রকল্পের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচলানার জন্য একজন স্থায়ী প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের দাবি করেন।

প্রকল্প পরিচালক নাহিদ মঞ্জুরা প্রথম আলোকে বলেন, জনবল আরও বাড়াতে মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে। এই প্রকল্পের আওতায় যেসব কার্যক্রম আছে, সেগুলোকে নানাভাবে সক্রিয় রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। যেমন ডিএনএকে আলাদা করা, ওসিসির সেবাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
অধীনে দেওয়া, ১০৯ হটলাইন জাতীয় পর্যায়ে যুক্ত করা ইত্যাদি। 

কর্মীদের বেতন বকেয়া পড়ার কারণ সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলার সময় ছয় মাসের বেতন বকেয়া পড়েছিল। এরপর যে অর্থ ছাড় হয়েছিল, তা থেকে তিন মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই আরও অর্থ ছাড় হতে যাচ্ছে। তখন বাকি বেতন দেওয়া হবে। 

এ ধরনের প্রকল্পে কাটছাঁট ঠিক নয়

এ ধরনের প্রকল্পে ব্যয় সংকোচনের সঙ্গে একমত নন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নারী ও শিশুর জন্য নেওয়া এসব প্রকল্পে কোনোভাবেই বরাদ্দ কাটছাঁট করা উচিত নয়। দরকার হলে সরকার অন্য ব্যয় কমিয়ে এখানে বরাদ্দ বাড়াতে পারে। নারী ও শিশুদের অবস্থান শক্ত না করলে উন্নয়ন পরিপূর্ণতা পাওয়া যাবে না। 

তানিয়া হক বলেন, দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের মূল কারণগুলো রয়ে গেছে। তাই এ ধরনের প্রকল্পে সমঝোতা করা মানে তাঁদের আরও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া। প্রকল্পের বিপুলসংখ্যক জনবল বাদ দিলে অনেক নারী-পুরুষ চাকরি হারিয়ে বেকার হবে, যা কোনো সমাজের জন্য ভালো কিছু নয়।